ডেস্ক রিপোর্ট: ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর করে গাজা দখলের প্রস্তাব দিয়ে বিশ্বব্যাপী চাঞ্চল্য তৈরি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই পরিকল্পনা ঘোষণা করার পরই ঘরে বাইরে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে বিষয়টি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত সেসব প্রতিক্রিয়া নিয়েই এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
হামাস কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি
গাজা নিয়ন্ত্রণের এক অবাস্তব এবং হাস্যকর খায়েশ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। এসব অদ্ভুত মতবাদে আঞ্চলিক অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা থাকে।
সৌদি আরব
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিজেদের ভূখণ্ড থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের যে কোনও প্রস্তাব সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করে রিয়াদ। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব নয়।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ
আমাদের অবস্থান এখনও অপরিবর্তিত আছে। আমরা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করি।
ডেমোক্র্যাট সদস্য এবং ফিলিস্তিনি-মার্কিন আইনপ্রণেতা রাশিদা তালিব
ফিলিস্তিনিরা কোথাও যাবে না। কংগ্রেসে গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূলে দুই দলের সমর্থন থাকায় ট্রাম্প এমন চরমপন্থি কথা বলার সাহস পাচ্ছেন। দুই রাষ্ট্র সমাধানে বিশ্বাসী সহকর্মীদের এখন সরব হওয়া উচিত।
ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন
২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে বলপূর্বক উচ্ছেদ করে গাজা দখলের প্রস্তাব জাতিগত নির্মূল ছাড়া কিছুই নয়।
ইউএস মুসলিম অ্যাডভোকেসি গ্রুপ কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশনস
গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বলপূর্বক উচ্ছেদ করলে তা হবে মানবতা বিরোধী অপরাধ। এতে যেমন আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি চূড়ান্ত অবজ্ঞা প্রকাশ পাবে, তেমনি বিশ্বব্যাপী সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। আর বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের জাতিগত সম্মানের যতটুকু অবশিষ্ট ছিল, তাও উবে যাবে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএ’র নির্বাহী পরিচালক পল ও ব্রায়েন
গাজা উপত্যকা ফিলিস্তিনিদের জন্মভূমি। সেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করা মানেই জাতি হিসেবে তাদের ধ্বংস করে দেওয়া। গাজায় হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী কেবল ইসরায়েলি সরকার, যারা মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে নির্মমভাবে বেসামরিকদের হত্যা করেছে।
ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি জেক অশিনক্লস
নিউজন্যাশন ক্যাবল চ্যানেলে তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের প্রস্তাব অযৌক্তিক ও অবিবেচনা প্রসূত। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বহু কষ্টে সম্পাদিত যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর হওয়ার পথে বাঁধা হতে পারে।
তিনি আরও বলেছেন, এই প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট বুঝতে হলে ট্রাম্পের উদ্দেশ্য নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। তিনি যখনই কোনও নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা বলেন, তার নেপথ্যে কোনও ব্যক্তিগত স্বার্থ ও স্বজনপ্রীতির বিষয় জড়িত থাকে।
ট্রাম্প ও তার জামাতা জ্যারেড কুশনারের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, তারা জায়গাটিকে অবকাশযাপন কেন্দ্রে পরিণত করতে চান।

Discussion about this post