ডেস্ক রিপোর্ট: সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শহর কারদাহার সমাধিস্থল ভেঙে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল আসাদের লাশ চুরি হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে সিরীয় মিডিয়া। কে বা কারা আসাদের লাশ চুরি করেছেন সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
সোমবার সকালে সাবেক প্রেসিডেন্টের লাশ চুরির তথ্য নিশ্চিত করেছে সিরিয়ান মিডিয়া। খবর জেরুজালেম পোস্টের।
হাফিজ আসাদ সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের বাবা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, সমাধিস্থলটি ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। একসময় সুসজ্জিত কবর এখন ধ্বংসস্তূপ, সেখানে এখন একটি বড় গর্ত দেখা যাচ্ছে। কিন্তু লাশ নাই কবের।
হাফিজ আল-আসাদের লাশ বর্তমানে কোথায় আছে, সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। এই ঘটনা এমন এক সময় ঘটল যখন সুন্নি-নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা বেড়ে চলেছে।
গত ডিসেম্বরে বিদ্রোহী যোদ্ধারা হাফিজ আল-আসাদের কবরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় বিদ্রোহীদের কয়েকজন সেখানে পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে কবর পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেন।
এএফপি বলছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের আলাউইত সম্প্রদায় অধ্যুষিত লাতাকিয়া প্রদেশের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হাফিজ আল-আসাদের কবরে আগুন দেন বিদ্রোহীরা।
ভিডিওতে দেখা যায়, কারদাহায় হাফিজের কবরে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছেন ক্ষুব্ধ বিদ্রোহী যোদ্ধারা। এছাড়া তাদের ধরিয়ে দেওয়া আগুনে কবরস্থানের অন্যান্য স্থাপনাও পুড়ে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আসাদের বাবা ২০১২ সালে মারা যান। তাকে লাতাকিয়ার কারদাহাতে পরিবারের পৈতৃক সমাধিতে দাফন করা হয়।
বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আল-আসাদ ১৯৭১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন। তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
রাশিয়া ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এতে করে বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
যদিও সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে পড়ায় এবং ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ব্যস্ত থাকায় বিদ্রোহীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠে। এই পর্যায়ে এসে বিদ্রোহীরা সম্প্রতি হামলা শুরু করলে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নাটকীয়ভাবে দামেস্ক ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট আসাদ।

Discussion about this post