ডেস্ক রিপোর্ট: সৌদি আরবের কাছে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (৯ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধ করতে সৌদিকে চাপ দিতে তিন বছর আগে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল জো বাইডেনের প্রশাসন। তবে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আগামী সপ্তাহ থেকে আবারও অস্ত্র বিক্রি শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সম্প্রতি তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ নিহতের পর, ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর থেকেই এই অঞ্চলে সংঘাতের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। যার কারণে নতুন করে সৌদি আরবে আক্রমণাত্মক গোলাবারুদ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আকাশ থেকে ভূমিতে হামলা চালানোর মতো কিছু যুদ্ধাস্ত্র সৌদি আরবে বিক্রি-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। প্রচলিত অস্ত্র হস্তান্তর নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ধাপে ধাপে এসব অস্ত্র সৌদির কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই সপ্তাহেই সৌদিতে অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্তটি মার্কিন কংগ্রেসকে জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। কংগ্রেসের সূত্র অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহ থেকেই অস্ত্র বিক্রি শুরু হতে পারে। শুক্রবার বিকেলেই বিক্রি-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন।
মার্কিন আইনের অনুযায়ী, বড় আন্তর্জাতিক অস্ত্র চুক্তিগুলো চূড়ান্ত হওয়ার আগে কংগ্রেসের সদস্যরা সেটি নিয়ে পর্যালোচনা করেন। ডেমোক্র্যাটিক এবং রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সৌদি আরবকে আক্রমণাত্মক অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে প্রশ্ন তুললেও, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে বিষয়টি নিয়ে সুর নরম করেছেন। বিশেষ করে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর সৌদিতে অস্ত্র বিক্রি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন তারা।
২০১৪ সালের শেষের দিকে ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে সৌদি-সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে হুথিরা। আর ২০১৫ সালে সৌদির নেতৃত্বে একটি সামরিক জোট ইয়েমেন হামলা শুরু করে। হামলায় মার্কিন অস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহার করত সৌদি জোট । এ যুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়। ইয়েমেনের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
এরপর ক্ষমতায় এসে ২০২১ সালে সৌদিতে অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
২০২২ সালের মার্চ থেকে সৌদি ও হুতিরা জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যায়। এরপর ইয়েমেনে সৌদি আরব কোনও বিমান হামলা চালায়নি। অন্যদিকে সৌদিতে হুতি হামলাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।

Discussion about this post