ডেস্ক রিপোর্ট: ক্যাম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর পদত্যাগের চাপে পড়েছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। তার জোট সরকার পতনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।
বিবিসি লিখেছে, সীমান্ত বিরোধ নিয়ে হুন সেনের সঙ্হে ফোনে পায়েতংতার্নের কথা হয়েছিল। সেই কথপোকথন ফাঁস হওয়ায় জনরোষ ছড়িয়ে পড়ার পর পায়েতংতার্নের পুয়ে থাই পার্টির জোট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শরিক দল জোট থেকে বেরিয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্নের ক্ষমতাসীন কোয়ালিশনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক দল ভূমজাইথাই পার্টি বুধবার জোট থেকে বেরিয়ে আসে। এতে পার্লামেন্টে বড় ধাক্কা খেয়েছে পায়েতংতার্নের দল। ফোনালাপের সময় ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত হুন সেনকে ‘আঙ্কেল’ সম্বোধন করে তাকে ‘সহযোগিতা’ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন পায়েতংতার্ন। এছাড়াও এক থাই সামরিক কমান্ডারকে বরখাস্ত করতে চাওয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি।
গত মাসে ক্যাম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড সীমান্তে সংঘর্ষে একজন ক্যাম্বোডিয়ান সেনা নিহত হওয়া নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। সীমান্ত উত্তেজনা সামাল দেওয়া থাই সেনা কর্মকর্তাকে নিয়ে ফোনালাপে নেতিবাচক মন্তব্য করতেও শোনা গিয়েছিল পায়েতংতার্নকে। তিনি বলেছিলেন, ‘ওই কমান্ডার শুধু নিজেকে শান্ত দেখাতে চেয়েছিলেন, যা কোনও কাজে আসেনি।’
পরে বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন থাই প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘ক্যাম্বোডিয়ান এক নেতার সঙ্গে আমার ফোনালাপের অডিও ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জনগণের মাঝে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তার জন্য আমি দুঃখিত।’
পায়েতংতার্ন দাবি করেছেন, ফোনালাপে তার ভাষা ছিল কূটনৈতিক কৌশলের অংশ। তবে সমালোচকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর কথায় দেশের মর্যাদা এবং রাজনৈতিক দিক থেকে প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর মানহানি হয়েছে।
বিবিসি জানায়, হুন সেন বলেছেন, ফোনালাপটি তিনি ৮০ জন রাজনীতিবিদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন। তাদেরই কেউ একজন তা ফাঁস করেন। পরে তিনি তার ফেসবুক পেজে ১৭ মিনিটের পুরো অডিও রেকর্ড পোস্ট করেন।
মাত্র ১০ মাস আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাইল্যান্ডের দায়িত্ব নিয়েছিলেন পায়েতংতার্ন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্রেত্তা থাভিসিনকে সাংবিধানিক আদালত পদচ্যুত করার মাত্র দুই দিন পর গত অগাস্টে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তিনি থাইল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী এবং তার ফুফু ইংলাক সিনাওয়াত্রার পর তিনিই দেশটির দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী।
তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিতাড়িত নেতা থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা। আবার, থাকসিনের সঙ্গে ক্যাম্বোডিয়ার হুনের পারিবারিক সম্পর্ক বহুদিনের। হুন সেন ও থাকসিন একে অপরকে ‘ধর্মের ভাই’ হিসেবে সম্বোধন করেন।

Discussion about this post