ডেস্ক রিপোর্ট: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ১৫ মাসের নারকীয় তাণ্ডবের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েল। এ সুসংবাদ প্রকাশের পরই রাস্তায় নামেন গাজাবাসী। খান ইউনিসসহ পুরো গাজায় চলছে জনতার উৎসব। দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্লোগান। নেচে-গেয়ে দিনটি উপভোগ করছে শিশুরাও। পোড়ানো হচ্ছে আতশবাজি। এদিকে, যুদ্ধের জয়-পরাজয়ের হিসাবও শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এ সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ‘এপি’।
এপি বলছে, এ যুদ্ধে ইসরায়েল কৌশলগতভাবে নানান সাফল্য অর্জন করার দাবি করতেই পারে। যেমন ইসমাইল হানিয়াসহ হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের হত্যা, হামাসকে সমর্থন দেওয়া লেবাননের হিজবুল্লাহর ওপর, এমনকি ইরানে আক্রমণ চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মেরে ফেলা ও ক্ষতিসাধন করা ইত্যাদি।
সংবাদ সংস্থা আরও বলছে, ইসরায়েল তার প্রধান দুই লক্ষ্য হাসিল করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর একটি, হামাসকে নির্মূল করা। অন্যটি, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া সব ইসরায়েলিকে ফেরত আনা। গাজায় বিরামহীন নিষ্ঠুর হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটিকে অনেকটাই দুর্বল করতে পেরেছে, কিন্তু তারা আজও টিকে আছে। আবার গাজায় আটক জিম্মিদের কেউ কেউ ইসরায়েলি বাহিনীর হামলাতেই নিহত হয়েছেন। কাউকে কাউকে হামাস নিজে থেকে মুক্তি দিয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে ইসরায়েলি সেনাদের অগ্রযাত্রার মুখে কিছু জিম্মিকে হামাস হত্যা করেছে।
গাজায় থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনাকে নিজেদের ‘পবিত্র কর্তব্য’ হিসেবে দেখছে ইসরায়েল। এ কর্তব্য পালন করতে গিয়ে একতরফা চুক্তি মেনে বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার ‘যন্ত্রণা’ সইতে হবে তাকে। এর আগে কয়েক মাস ধরে আলোচনার পরও চুক্তি করতে না পারায় ইসরায়েলের ভেতরেও ক্ষতি হয়েছে অনেক।
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ‘সার্বিক বিজয়’ অর্জন ও গাজা থেকে সব জিম্মিকে দেশে ফেরানোর অঙ্গীকার করেছিলেন, তবে সেসব হয়নি।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির চুক্তির বিষয়টি জানান কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল থানি। গাজায় যুদ্ধবিরতির যে চুক্তি হয়েছে তা ১৯ জানুয়ারি, রোববার থেকে কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, কাতারের স্থানীয় সময় রাত ১০টার কিছু আগে সাংবাদিকদের সামনে তিনি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার এ ঘোষণা দেন।
ওই ব্রিফিংয়েই চুক্তি কার্যকর হওয়ার সময়সীমার কথা জানান তিনি। ঘোষণায় তিনি বলেছেন, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি করেছে। ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার অনুমোদিত চুক্তিটি রোববার থেকে কার্যকর হবে।

Discussion about this post