ডেস্ক রিপোর্ট: ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে শুরু হওয়া পরোক্ষ আলোচনা রোববার ওমানে শেষ হয়েছে। আলোচনার পর দুই পক্ষই জানিয়েছে, আলোচনা কঠিন হলেও উপকারী হয়েছে এবং শিগগিরই আবার বসতে হবে। তবে তেহরান এখনো তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনড়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘায়ি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে বলেন, ‘আলোচনাগুলো কঠিন হলেও পরস্পরের অবস্থান বুঝতে সহায়ক হয়েছে।’ ওমানই পরবর্তী দফার সময় ও স্থান জানাবে বলে তিনি জানান।
এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যে চতুর্থ দফা আলোচনা হয় ওমানের রাজধানী মাসকটে, যেখানে ওমান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে।
প্রকাশ্যে কঠোর অবস্থান নিলেও যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় কিছু নমনীয়তা দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছে ইরানি সূত্র। তবে দুই পক্ষের ‘লাল দাগ’ এখনো একই জায়গায় রয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মূল দাবি—ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ও নাতানজ, ফরদো এবং ইসফাহানের পরমাণু স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় করা। অন্যদিকে, ইরান এসব দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
আরাকচি বলেছেন, ‘ইরানের পারমাণবিক অধিকার নিয়ে আমরা কোনো আপস করব না, এতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণও অন্তর্ভুক্ত।’ তিনি জানান, কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তবে পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ বা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম হস্তান্তর ইরানের জন্য ‘অপসারণযোগ্য নয়’ এমন শর্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ কর্মকর্তার মতে, আলোচনা তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এবং এতে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আজকের ফলাফলে আমরা আশাবাদী এবং সামনে আরও একটি দফা আলোচনার অপেক্ষায় আছি।’
এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আসন্ন মধ্যপ্রাচ্য সফরের প্রাক্কালে। ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় ফিরে ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ দেওয়ার কৌশল ফিরিয়ে এনেছেন এবং বলেছেন, কূটনীতি ব্যর্থ হলে সামরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০১৮ সালে ট্রাম্প ইরানের ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ান এবং কঠোর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। এরপর থেকেই ইরান ২০১৫ সালের চুক্তির শর্ত ভেঙে ৬০% মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে।
এদিকে, ইরান তার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়েও কোনো আলোচনা করবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে তেহরান চায়, যেকোনো চুক্তিতে এমন নিশ্চয়তা থাকতে হবে, ভবিষ্যতে ট্রাম্প আবার যেন সেই চুক্তি বাতিল করতে না পারেন।

Discussion about this post