ডেস্ক রিপোর্ট: ইসরাইলি বাহিনী যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৫০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে এবং প্রায় ১৮০০টি বোমা নিক্ষেপ করেছে।
এসব হামলার মাধ্যমে সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। বর্বর ইসরাইলি সূত্রকে উদ্ধৃত করে আল-মায়াদিন এ তথ্য জানিয়েছে।
সিরিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ককে ঘিরে থাকা মাউন্ট কাসিয়োন লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে ইসরাইলি স্থলবাহিনী সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের আরও গভীরে প্রবেশ করেছে এবং সিরিয়ার গোলান উপত্যকাতে তাদের দখল সম্প্রসারিত করেছে।
এছাড়াও ইসরাইলি বাহিনী বৃহস্পতিবার কুনেইত্রা প্রদেশের আল-হুরিয়া শহরে প্রবেশ করে। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, প্রদেশটির রাসেম আল-রুওয়াদি গ্রামের বাসিন্দাদের জোরপূর্বক তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরাইলি বাহিনী এর আগে বুধবার রাতে রুয়াইহিনা এবং উম্ম বতনা শহরে অভিযান চালায়। এ সময় স্থানীয়দের বাড়িতে তল্লাশি চালানো এবং তাদের এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যা তাদের নতুন করে ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ তৈরির পরিকল্পনারই অংশ।
প্রতিক্রিয়া ও নিন্দা
সম্প্রতি ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, সিরিয়ার দক্ষিণে ‘হুমকিহীন প্রতিরক্ষা অঞ্চল’ তৈরি করা হবে। যা ১৯৭৪ সালের বিভাজন চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তবে সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় একাধিক আঞ্চলিক দেশ ইসরাইলের এই আগ্রাসনকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়েছে।
জাতিসংঘের এক সূত্র জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী গোলান উপত্যকার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের কাজ বাধাগ্রস্ত করছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, গোলান উপত্যকা চিরকাল ইসরাইলের অংশ হবে। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, যিনি ২০১৯ সালে ইসরাইলের গোলান উপত্যকা দখলকে সমর্থন করেছিলেন।
যদিও জাতিসংঘ এবং অধিকাংশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গোলানকে সিরিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের পরিকল্পনা
নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি ২০২৩ সালের ৯ অক্টোবর ‘মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দেওয়ার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইসরাইলি সেনারা এখন সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। তারা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরের কাতানা শহরে অবস্থান নিয়েছে।
ইসরাইলের এই আগ্রাসন সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের ওপর গুরুতর আঘাত হেনেছে এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করতে পারে। সিরিয়ার জনগণ এবং আঞ্চলিক শক্তিগুলো এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। খবর: মেহের নিউজ এজেন্সি

Discussion about this post