ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের বিমান হামলায় নিহত ব্যক্তিদের ‘প্রতিটি রক্তের ফোঁটার’ প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে অঙ্গীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। এ ছাড়া তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ করার কারণে শত্রুকে কাপুরুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
বুধবার (৭ মে) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই অঙ্গীকার করেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ডন।
শেহবাজ বলেন, ‘এটি সেই কাপুরুষ শত্রু, যারা নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ করে এবং নিজেকে আরও শক্তিশালী মনে করে। কিন্তু আমরা গত রাতে প্রমাণ করেছি যে পাকিস্তান জানে কীভাবে তার প্রতিরক্ষায় উপযুক্ত জবাব দিতে হয়। জাতি সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা ও শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর এত ক্ষতি করেছে যে তারা এই ক্ষত “সহজে সারতে পারবে না”।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শত্রুকে নতজানু করতে “মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছে”। আল্লাহর কৃপায়, আমাদের বিমানগুলো আকাশে এমন ঝড় তুলেছিল যে শত্রুরা চিৎকার করে উঠল। ভারতের গর্ব ছিল, এমন পাঁচটি যুদ্ধবিমান এখন কেবল ছাই ও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।’
‘ভারতের কাপুরুষোচিত আক্রমণে ২৬ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছে। আমরা মাত্র সাত বছর বয়সী এক শিশু ইরতাজা আব্বাসের জানাজা আদায় করেছি।’
ভারতকে তাদের বিমান হামলার ‘পরিণাম ভোগ করতে হবে’ হুঁশিয়ার করে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ‘হয়তো তারা ভাবছিল আমরা পিছু হটব, কিন্তু তারা ভুলে গেছে যে এটা এমন একটা জাতি, যারা তাদের দেশের জন্য লড়াই করতে জানে।’
প্রচলিত যুদ্ধে শত্রুর ওপর পাকিস্তান সামরিক বাহিনী আবারও তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ। তিনি দেশের সামরিক, নৌ ও বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং বলেন যে সমগ্র জাতি তাদের জন্য গর্বিত।
বিবিসি জানিয়েছে, শেহবাজ শরিফ ভারতের হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ বলে নিন্দা করে বলেছেন, ‘পাকিস্তান গত রাতে দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা পাল্টা লড়াই করতে জানে। এক ঘণ্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কার্যত সীমান্তে “অবিরাম যুদ্ধ” হয়েছিল, যেখানে সেনাবাহিনী তাদের সাহসিকতা প্রদর্শন করে লড়াই করেছিল। তারা আক্রমণকারী ও শত্রুদের বিমান ধ্বংস করে দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী দিল্লির উদ্দেশে বলেন, ‘পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করেছে, অথচ এ বিষয়ে দিল্লি কোনো মন্তব্য করেনি।’
পাকিস্তানি জনগণকে সাহস দেখানোর আহ্বান জানিয়ে শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমার পাকিস্তানি জনগণের নিরাপত্তার জন্য, আমাদের সেনাবাহিনী ও আমাদের জনগণের জন্য সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা অবশ্যই তাদের (ভারতের) বিরুদ্ধে দাঁড়াব এবং জিতব।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভাষণের শেষাংশে বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তার জন্য পাকিস্তানি জনগণের সাহসের প্রয়োজন এবং আমরা সবাই সত্যের জন্য লড়াই করছি। আশা করি আল্লাহ সর্বদা আমাদের সাথে থাকবেন।’

Discussion about this post