ডেস্ক রিপোর্ট: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ভেতরে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ আটকা পড়ে আছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
স্টিফেন ডুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘গাজার ভেতরে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ আটকা পড়েছে। চলমান যুদ্ধ এবং সাহায্য সরবরাহ হ্রাসের ফলে মানসিক চাপের মাত্রা বেড়েছে- বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) এর উদ্ধৃতি দিয়ে ডুজারিক বলেন, গত ২ মার্চ ইসরাইল গাজায় মানবিক সাহায্যসহ পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে মানবিক সরবরাহ প্রায় হ্রাস পাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রায় ৯০ শতাংশ পানি সম্পদের সঙ্গে যুদ্ধের কারণে পানি খাত গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাতিসংঘের এই মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি যে দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরাইলের আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে স্পষ্ট বাধ্যবাধকতা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, চিকিৎসা সরবরাহ এবং জনস্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করা এবং যখন অন্যথায় সরবরাহ করা হয় না তখন মানবিক ত্রাণ সরবরাহ করা। ’
পশ্চিম তীরের বিষয়ে ডুজারিক বলেন, উত্তরে ইসরাইলি অভিযান অব্যাহত থাকায় হাজার হাজার বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং বাড়ি ফিরতে পারছে না।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই
নারী ও শিশু।
দীর্ঘ ১৫ মাস যুদ্ধের পর গত ১৯ জানুয়ারি কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এটি ছিল তিন পর্বের। প্রথম পর্বে ছিল যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি-বন্দি বিনিময় শুরু করা, দ্বিতীয় পর্বে ছিল জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের কাজ শেষ করা এবং গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, তৃতীয় পর্বে ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে পুনর্গঠন।
তবে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ না করে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। ইসরাইলের ফের শুরু করা এই হামলায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া অভিযান শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে খাদ্য ও অন্যান্য জরুরি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দিচ্ছে না দখলদার বাহিনী।

Discussion about this post