Print Date & Time : 22 April 2025 Tuesday 3:02 am

৩৮৫ কোটি বছরের পুরোনো গর্তে ‘ঘুমাচ্ছে’ চন্দ্রযান-৩

ডেস্ক রিপোর্ট: শুরু থেকেই মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। আমরা হয়ত অনেকেই জানি না, চাঁদেও আছে পৃথিবীর মতো অসংখ্য পাহাড়, সমতল কিংবা গভীর খাদ। বলা হয়ে থাকে গ্যালিলিও সর্বপ্রথম টেলিস্কোপের সাহায্যে চাঁদের পৃষ্ঠতল দেখতে পান।

চাঁদের এই অসংখ্য রহস্য উদঘাটন করতে পৃথিবীর বুক থেকে মানুষ বেশ আগে থেকেই গবেষণা করে আসছে। এতে অনেকে যেমন সফল হয়েছে, আবার অনেকেই রহস্যের গোড়ায়ও যেতে পারেনি।

পৃথিবী থেকে এসব রহস্য উদঘাটন করা খুব একটা সহজ ছিল না। তিন লাখ ৮৪ হাজার চারশ কিলোমিটার দূরে থাকা এই উপগ্রহ নিয়ে পৃথিবী থেকে বেশকিছু মিশনের একটি হলো চন্দ্রাভিযান। ভারত তাদের তৃতীয় চন্দ্র মিশন চালায় ১৪ জুলাই ২০২৩ সালে। দীর্ঘ এক মাস নয় দিনের যাত্রা শেষে ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-থ্রি চাঁদের বুকে অবতরণ করেছিল বলে জানা যায়।

চন্দ্রযান চাঁদের মাটিতে চলতে চলতে চাঁদ তৈরি হওয়া ৩৮৫ কোটি বছরে আগে তৈরি গর্তে রয়েছে। রোভার প্রজ্ঞানের ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই অভিযান নিয়ে তারা জানায়, চাঁদের যে অংশে ভারতের মহাকাশযান পৌঁছেছে, সেখানে এর আগে কেউ কখনো পৌঁছতে পারেনি। আনুমানিক ৩৮৫ কোটি বছর আগের গর্তে পা রেখেছে চন্দ্রযান-৩।

ইসরোর ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা জানায়, চাঁদে যে গর্তে চন্দ্রযান-৩ নেমেছে, যেখানে এখনো রয়েছে রোভার প্রজ্ঞান, সেই গর্ত নেকটারিয়ান যুগে তৈরি হয়েছে। প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে সে যুগের অস্তিত্ব ছিল।

ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির প্ল্যানেটারি সায়েন্স ডিভিশনের সহকারী অধ্যাপক এস বিজয়ন এ নিয়ে জানায়, ‘চন্দ্রযান-৩ যেখানে নেমেছে, তার অনন্য ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। রোভার প্রজ্ঞানের ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলোই প্রমাণ করে দিচ্ছে, গর্তটি কতটা পুরোনো।

বস্তুত মহাকাশে কোনো গ্রহ বা উপগ্রহের পৃষ্ঠে গ্রহাণুর ধাক্কায় সৃষ্টি হওয়া গর্তকে ‘ক্রেটার’ বলা হয়। তেমনই একটি ‘ক্রেটারে’ নেমেছিল চন্দ্রযান-৩। গর্তটি প্রায় ১৬০ কিলোমিটার বিস্তৃত বলে ধারণা করেন বিজ্ঞানীরা। ওই গর্ত অর্ধবৃত্তাকার বলেও জানায় তারা।

সফল কার্যক্রম শেষে, চাঁদের মাটিতেই নিষ্ক্রিয়ভাবে পড়ে রয়েছে ওই ল্যান্ডার ও রোভার। তবে ‘ঘুমিয়ে’ পড়ার আগে রোভারের ক্যামেরায় চাঁদের অদেখা অংশের নানা ছবি উঠেছে। এখনো সেগুলো নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।