Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 8:43 am

হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরাইল

ডেস্ক রিপোর্ট: লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে নীতিগতভাবে সম্মতি জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। স্থানীয় সময় রোববার রাতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর এ সম্মতি দিয়েছেন তিনি। টাইমস অব ইসরাইল, আলজাজিরা।

জেরুজালেম, ওয়াশিংটন ও বৈরুতের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে একাধিক ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি এখনও চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়নি। বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আরও আলোচনা করতে হবে। তবে তেল আবিব যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের মূল নীতিগুলোকে অনুমোদন করেছে।

সোমবার ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ইয়েনেট বলেছে, ইসরাইলের মনোভাব লেবাননকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ইসরাইলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে লেবানন সরকার ও দেশটির সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহও। গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহর প্রধান নাইম কাশেম জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন প্রস্তাব তারা পর্যালোচনা করেছেন এবং সংসদের স্পিকার নাবিহ বেরির মধ্যস্থতার মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দিয়েছেন।

মার্কিন বিশেষ দূত আমোস হোচস্টেইন গত সপ্তাহ বৈরুত, জেরুজালেম ও লেবানন সফর করে সবপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেছেন সম্ভাব্য চুক্তিটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এটাই তাদের শেষ সুযোগ। সম্ভাব্য মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে যাবে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ। একে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ভিত্তি হিসাবে দেখা হচ্ছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইসরাইল সংলগ্ন দক্ষিণ লেবানন বিশেষ করে লিতানি নদীর দক্ষিণে হিজবুল্লাহর কোনো অবস্থান থাকবে না। সেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠী বলতে কেবল লেবাননের সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা অবস্থান করতে পারবে।

এদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনার মধ্যেই ইসরাইলি ভ‚খণ্ডে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। প্রথমবারের মতো ইসরাইলের দক্ষিণে আশদোদ নৌ ঘাঁটিতে এক ঝাঁক ড্রোনসহ বিমান হামলার কথা জানিয়েছে গোষ্ঠীটি। এছাড়া তেল আবিবের এক সামরিক অবকাঠামোতে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যারেজ এবং ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। পৃথক দুই বিবৃতিতে এসব হামলার কথা জানিয়েছে হিজবুল্লাহ।

সোমবার ইসরাইলি আর্মি রেডিও জানিয়েছে, লেবানন থেকে ৩৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। ইসরাইলের মেডিকেল সংস্থা জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর এসব হামলায় ১১ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। মধ্য বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় ২৯ জন নিহতের ঘটনার একদিন পরই লেবানন থেকে এই হামলা চালানো হলো। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এক ঘোষণায় জানিয়েছে যে, তারা লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দাহিয়েহ এলাকায় হিজবুল্লাহর ১২টি সামরিক সদরদপ্তরে হামলা চালিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হিজবুল্লারহ গোয়েন্দা সদর দপ্তর এবং এর মিসাইল ইউনিটসহ বেশ কিছু স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।

এর আগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় টায়ার এবং নাকোরার মধ্যবর্তী এলাকায় একটি সেনাঘাঁটিতে ইসরাইলি হামলায় লেবাননের এক সেনা নিহত এবং আরও ১৮ জন আহত হয়েছেন। লেবাননের সামরিক বাহিনী এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত শুরুর পর থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় লেবাননের ৪০ জনেরও বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।