Print Date & Time : 2 September 2025 Tuesday 5:59 am

হামাসের মুখপাত্র আবু ওবেইদাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

ডেস্ক রিপোর্ট: গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের সশস্ত্র শাখার মুখপাত্র আবু ওবেইদা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে হামাস এখনও এ দাবি নিশ্চিত করেনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

রবিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে সেনাবাহিনী (আইডিএফ) ও নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতকে অভিনন্দন জানান। তিনি একে ‘ত্রুটিহীন অভিযান’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। কাৎজ হুমকি দিয়ে বলেছেন, আবু ওবেইদার অপরাধী সহযোগীরাও লক্ষ্যবস্তু হবে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, শনিবার আল-রিমাল এলাকায় ছয়তলা একটি ভবনে পাঁচটি নির্দিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। ওই ফ্ল্যাটটি দাঁতের চেম্বার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের পর বিপুল অঙ্কের টাকা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এই টাকার বেশিরভাগ হামাস সদস্যরা সংগ্রহ করে।

হামাস বলেছে, এ হামলায় একটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয় এবং অন্তত সাতজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, সাধারণ নাগরিকের ক্ষতি কমাতে নিখুঁত অস্ত্র, আকাশ থেকে নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করা হয়েছিল।

আবু ওবেইদা সব সময় মুখ ঢাকা অবস্থায় বক্তব্য দিতেন। তিনি হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখ হয়ে উঠেছিলেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রাণঘাতী হামলার পর থেকে তিনি একাধিকবার ইসরায়েলবিরোধী দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়েছেন। শুক্রবারের ভাষণে তিনি ইসরায়েলকে সতর্ক করেছিলেন গাজা সিটি আক্রমণের পরিণতি নিয়ে।

ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা এ মাসের শুরুতে গাজা সিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। জাতিসংঘ এ পদক্ষেপকে বিধ্বংসী পরিণতির ঝুঁকি বলে সতর্ক করেছে। যুক্তরাজ্যের ইসরায়েল রাষ্ট্রদূতও একে বড় ভুল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আন্তর্জাতিক সমালোচনা উপেক্ষা করে হামাসকে ধ্বংসের অঙ্গীকার করেছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি হয়। এর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৩ হাজার।

বর্তমানে গাজা সিটিতে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষের বাস। এর ৯০ শতাংশের বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি, পয়োনিষ্কাশন ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। গত সপ্তাহেই শহরটিতে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।