বাংলাদেশ বুরো: বাংলাদেশের সদ্য বিদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা আখড়ে রাখার প্রচেষ্টার চাঞ্চল্যকর তথ্য একের পর এক প্রকাশ হচ্ছে । বেরিয়ে আসছে সব কালো অধ্যায়ের চাঞ্চল্যকর তথ্য। ১৬ বছরে যে কালো অধ্যায়ের সূচনা করেন পলাতক এই স্বৈরশাসক হাসিনা তা রীতিমতো গা শিউরে ওঠার মত।
ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্মম গণহত্যার ভিডিও একের পর এক প্রকাশ হচ্ছে। ইন্টারনেট বন্ধ রেখে যে গণহত্যা চালিয়েছে এই স্বৈরশাসকের পুলিশ, গোয়েন্দা, ্যাব তথা আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী তার বীভৎস চিত্র দেখার মত নয়।
বিভিন্ন প্রকল্পের নামে লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকা দুর্নীতির সব তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে বিগত স্বৈরাশাসকের দোসোর বিভিন্ন সরকারি আমলা এবং ব্যবসায়িকরা সীমাহীন দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল।
ব্যাংকিং খাত অর্থনৈতিক খাত শিক্ষা ব্যবস্থা সহ নিজেদের খেয়ালখুশিমত ধ্বংস করেছে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার।
এত কিছু করেও পালানোর শেষ সময়ে অধিক বল প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছিলেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা।
এমনকি শেষ মুহূর্তে তার রক্ষাকারী এসএসএফের মাধ্যমে মোকাবেলা করতে চেয়েছিলেন এই কুখ্যাত স্বৈরাচার।
সেনাপ্রধানকে এসএসএফের মাধ্যমে গুলি করে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরে শেখ রেহানাকে এসএসএফ বুঝালে শেখ হাসিনাকে কনভিন্স করার চেষ্টা করেন শেখ রেহানা। কিন্তু শেখ হাসিনাকে রাজি করাতে পারেননি শেখ রেহানা। পরে পুরো পরিস্থিতি শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফোনের মাধ্যমে বুঝালে তিনি পদত্যাগ করে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে রাজি হন।
ইউ এস বেঙ্গলকে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন বাংলাদেশের একজন সামরিক অফিসার, কিন্তু তিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছিলেন।
৫ আগস্টের সেই ঐতিহাসিক দিনটি ছাত্রজনতার জন্য ছিল বিজয়ের, কিন্তু গণভবনের প্রহরায় থাকা বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) সদস্যদের জন্য তা ছিল আতঙ্কের।
ঐদিন পরিস্থিতি অনুধাবন করে তিন বাহিনীর প্রধান শেখ হাসিনার গণভবনে যান। তারা শেখ হাসিনাকে পরিস্থিতি বোঝানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু শেখ হাসিনা কিছুতেই পরিস্থিতি মেনে নিতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে তিনি সেনাপ্রধানের ওপর ক্ষুব্ধ হন এবং এসএসএফ সদস্যদের তাদের আধুনিক অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত হতে বলেন এবং তাদের সাথে থাকা অত্যাধুনিক গ্রানেট সহ সমস্ত সরঞ্জাম রেডি করতে বলেন।
এবং এই সময় তিনি সেনাপ্রধান কে মেরে ফেলার হুমকি দেন এবং ছাত্র জনতাকে নির্মূল করার জন্য সামরিক বাহিনীকে অধিক বল প্রয়োগ করতে বলেন। তবে জয়ের ফোন কলের পর পরিস্থিতি উল্টে যায়।
গণভবনের বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্টিক্যাল গিয়ার, বা অস্ত্র, গোলাবারুদ, সাজসরঞ্জাম, বেতার যোগাযোগ ও অপারেশনাল সরঞ্জামাদির মজুত ছিল এসএসএফের। কিন্তু, ৫ আগস্টের সেই দিনে, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পরপরই ছাত্র জনতার জনরসের মুখে হাতে সময় একদমই না থাকায়, এসব ফেলে শুধু নিজেদের সঙ্গে থাকা ছোট আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিভিন্নভাবে গণভবন থেকে সংসদ ভবনে গিয়ে প্রাণরক্ষার চেষ্টা করেন তারা।
জনতা যখন সংসদ ভবনেও ঢুকে পড়ে, তখন এসএসএফ সদস্যরা দ্রুত নিজেদের অস্ত্র অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, ফ্ল্যাশব্যাং গ্রেনেড, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম, বেতার যোগাযোগের ডিভাইস ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও পোশাক খুলে সংসদ ভবনের ভল্টে রেখে সাধারণ পোশাকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে প্রাণরক্ষা করেন। পরবর্তীতে পরিদর্শন করে গণভবন ও সংসদ ভবনে থাকা ভল্টগুলো আর পাওয়া যায়নি, যা আন্দোলনকারী বেশে দুষ্কৃতিকারীরা নিয়ে গেছে বলে মনে করছে এসএসএফ।
বাংলাদেশের এসএসএফ অত্যাধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ, অত্যাধুনিক যানবাহন, অপারেশনাল ও যোগাযোগ সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে থাকে। এগুলো মূলত ভিআইপিদের বাসভবন, কার্যালয় ও অন্যান্য স্থানে সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়।

Discussion about this post