ডেস্ক রিপোর্ট: থমকে যাওয়া মানে থেমে থাকা নয়। যেসব দেশ মনে করছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে, তাদের ঘুম ভাঙাতে ফের ‘যুদ্ধ সাইরেন’ বাজালেন তিনি।
সময় থাকতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সন্ধি (চুক্তি) সেই দেশের সঙ্গে আর চুক্তি করবে না ওয়াশিংটন। উলটো ‘বিলম্ব-গাফিলতি’র শাস্তি হিসাবে আগের চাপানো শুল্কের বোঝা ওপর নতুন করে আরও শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্তও হতে পারে। সিএনএন, রয়টার্স।
মধ্যপ্রাচ্য সফরের শেষ দিনে শুক্রবার আবুধাবিতে এক ব্যবসায়িক গোলটেবিল বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি করতে চাওয়া দেশের সংখ্যা এত বেশি যে দ্রুত তাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে আলোচনার সুযোগ নেই।
তাই আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক এসব দেশের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেবেন, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করতে হলে কী হারে শুল্ক দিতে হবে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এখন একই সময়ে ১৫০টি দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে চাইছি, কিন্তু এত দেশের সঙ্গে একসঙ্গে বসা সম্ভব নয়। তাই শিগগিরই আমরা সবাইকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেব, খুব ন্যায্যভাবে, তাদের কত হারে শুল্ক দিতে হবে।’
চলতি বছরের ২ এপ্রিল ‘লিবারেশন ডে’ নামে পরিচিত দিনে ট্রাম্প নতুন ‘রেসিপ্রোকাল শুল্ক’ (পারস্পরিক শুল্ক) ঘোষণা করেন। তবে ৯ এপ্রিল তিনি ৯০ দিনের জন্য এই শুল্ক কার্যকর স্থগিত করেন, যাতে দেশগুলো আলোচনার সুযোগ পায়। ট্রাম্প প্রশাসনের ভাষ্যে, ইতিমধ্যে প্রায় ১০০টি দেশ আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছে, যা নিয়ে সময়ের চাপের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে একাধিক চুক্তিতে পৌঁছাতে হচ্ছে।
যেসব দেশের সঙ্গে চুক্তি হবে না, সেসব দেশের জন্য ট্রাম্প উচ্চহারে শুল্ক বসাতে পারেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। যদিও এগুলো ‘পারস্পরিক’ নয়, বরং ছোট দেশগুলোর ক্ষেত্রে অসম ভারসাম্য সৃষ্টি করবে, যাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি বেশি।
ট্রাম্প বলেন, ‘তারা চাইলে আপিল করতে পারে, কিন্তু আমরা যেহেতু সবার সঙ্গে দেখা করতে পারছি না, তাই খুব ন্যায্যভাবেই তাদের জানিয়ে দেব শুল্ক কত হবে।’
অতীতেও ট্রাম্প একই হুমকি দিয়েছেন, তবে কার্যকর সময়সীমা পার হয়ে গেছে। গত ২৩ এপ্রিল হোয়াইট হাউজে তিনি বলেন, যেসব দেশ নতুন চুক্তি করবে না, তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিজের মতো করে শুল্ক নির্ধারণ করবে।
এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য ও চীনের সঙ্গে দুটি নতুন বাণিজ্য কাঠামো ঘোষণা করেছে, যা শুল্ক কমাতে সহায়তা করেছে। এই দুটি চুক্তি পৃথকভাবে স্কট বেসেন্ট ও মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার সম্পন্ন করেন।
ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রশাসনের বক্তব্য, ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গেও আলোচনা এগোচ্ছে, যদিও দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন সরকার আসায় আলোচনা কিছুটা পিছিয়ে গেছে।

Discussion about this post