ডেস্ক রিপোর্ট: ২০২০ সালের ভারতের উত্তরপূর্ব দিল্লি দাঙ্গার ‘বড় ষড়যন্ত্র’ মামলায় উমর খালিদ ও আরও নয়জনকে জামিন দিতে মঙ্গলবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) সাবেক ছাত্র নেতা উমর খালিদের জন্য এটি জামিন চাওয়ার ষষ্ঠ ব্যর্থ চেষ্টা। খালিদ ইতিমধ্যেই সেশন আদালত থেকে তিনবার, দিল্লি হাইকোর্ট থেকে দুইবার জামিন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এবং একবার সুপ্রিম কোর্টে জামিন আবেদন প্রত্যাহার করেছেন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
উমর খালিদ এবং শার্জিল ইমামের পাশাপাশি মোহাম্মদ সেলিম খান, শিফা উর রহমান, আথার খান, মীরান হায়দার, শাদাব আহমেদ, আবদুল খালিদ সাইফি ও গালফিশা ফাতিমার জামিনের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে পূর্ব দিল্লি। সহিংসতায় ৫৩ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন ৭০০-এর বেশি মানুষ।
জুলাই ২০২১-এ উমর প্রথমবার কারকারদূমা আদালতে ক্রিপসি (সিআরপিসি) এর ধারা ৪৩৯ অনুযায়ী জামিনের আবেদন করেন। তবে সেপ্টেম্বরে তিনি আবেদন প্রত্যাহার করেন এবং ধারা ৪৩৭ অনুযায়ী জামিন চাইতে চান। ধারা ৪৩৯-এ এমন সকল মামলার জন্য জামিনের বিধান রয়েছে যেখানে জামিন পাওয়া অধিকার নয়। অপরদিকে ধারা ৪৩৭ অনুযায়ী কোনো গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে যা বেয়ারেবল অপরাধে বা নন-বেয়ারেবল অপরাধে অধিকার অনুযায়ী জামিন দেয়া হয়।
প্রসিকিউশন মূলত আবেদন করার বৈধতা এবং প্রযোজ্য ধারা নিয়ে আপত্তি তুলেছিল, যেখানে উমর প্রসিকিউশনকে বিলম্বী কৌশল অবলম্বনের অভিযোগ করেছিলেন।
সেপ্টেম্বর ২০২১-এ তিনি দ্বিতীয়বার কারকারদূমা আদালতে জামিন আবেদন করেন, যা ছয় মাস পর মার্চ ২০২২-এ প্রত্যাখ্যাত হয়। এরপর এপ্রিল ২০২২-এ তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন, যা অক্টোবর ২০২২-এ বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল ও জাস্টিস রজনিশ ভাটনগরের ডিভিশন বেঞ্চ প্রত্যাখ্যান করে।
এপ্রিল ২০২৩-এ উমর হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন, যা প্রায় এক বছর পর ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ ‘পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে’ তিনি প্রত্যাহার করেন।
ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ উমর তৃতীয়বার কারকারদূমা সেশন আদালতে জামিনের আবেদন করেন, যা মে ২০২৪-এ প্রত্যাখ্যাত হয়। এরপর জুলাই ২০২৪-এ তিনি দ্বিতীয়বার হাইকোর্টে আবেদন করেন এবং সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫-এ আবারও তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।
উমর খালিদের আইনজীবীর যুক্তি, তাদের বিনাবিচারে ৪ বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে জামিনের আবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু তা-ও বিচারাধীন। গোটা বিচার প্রক্রিয়া অকারণে দীর্ঘ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানান তিনি।

Discussion about this post