ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্ববাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে, তার সর্বনিম্ন হার হবে ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ, শুল্ক হার ১৫ শতাংশের নিচে নামবে না বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ জুলাই) ওয়াশিংটনে আয়োজিত এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের একটি সোজাসাপ্টা এবং সহজবোধ্য শুল্ক কাঠামো থাকবে, যার হার ১৫ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছু দেশের ক্ষেত্রে এই হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত যেতে পারে। কারণ, আমরা তাদের সঙ্গে ইতিবাচক বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারিনি।’
ট্রাম্পের এই বক্তব্য তার প্রশাসনের শুল্কনীতি আরও কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। বিশেষ করে, যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে বা যাদের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলছে, তাদের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ হতে পারে।
চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প জানান, তিনি বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশকে শুল্ক সংক্রান্ত চিঠি পাঠাবেন। তখন তিনি বলেছিলেন, শুল্ক হার হতে পারে ‘সম্ভবত ১০ অথবা ১৫ শতাংশ।’ তবে এখন তার বক্তব্যে ১৫ শতাংশকেই সর্বনিম্ন সীমা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক রোববার সিবিএস নিউজকে বলেন, ‘লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল এবং আফ্রিকার ছোট দেশগুলোর জন্য প্রাথমিক শুল্ক হার হবে ১০ শতাংশ।’ তবে গত এপ্রিল মাসে ট্রাম্প শুল্কনীতি নিয়ে প্রথম যখন ঘোষণা দেন, তখন তিনি প্রায় সব দেশের জন্য ১০ শতাংশ সাধারণ শুল্কের কথা জানিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহল শুরুর দিকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক চুক্তির সম্ভাবনার কথা বললেও এখন ট্রাম্প নিজেই শুল্ক চিঠিগুলোকে ‘চুক্তি’ হিসেবে প্রচার করছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, তিনি আনুষ্ঠানিক আলোচনা নয়, বরং একতরফাভাবে শুল্কনীতি প্রয়োগে আগ্রহী। যদিও কিছু ক্ষেত্রে দরজা খোলা রাখা হচ্ছে—যেখানে দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে তাদের জন্য শুল্কহার কমানো যেতে পারে।
মঙ্গলবার ট্রাম্প এক ঘোষণায় বলেন, জাপানের ওপর আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হবে। এর বিনিময়ে জাপান যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এবং কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো এখনও শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনাকে ট্রাম্প ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদি তারা আমেরিকান ব্যবসার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দরজা খুলে দেয়, তাহলে তাদের জন্য শুল্ক হার কমানো হবে।’

Discussion about this post