ডেস্ক রিপোর্ট: ফিলিস্তিনের গাজায় স্থায়ী যুদ্ধ বন্ধ ও ইসরাইলি সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার বিনিময়ে সব বন্দিকে ছাড়তে প্রস্তুত হামাস। দলটির শীর্ষ এক নেতা দখলদার বাহিনীকে নতুন এক প্রস্তাবে এমনটা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে হামাসের সিনিয়র নেতা ও আলোচনাকারী দলের প্রধান খলিল আল-হাইয়া এসব কথা বলেন। খবর রয়টার্সের।
তিনি বলেন, হামাস অন্তর্বর্তীকালীন কোনো চুক্তিতে সম্মত হবে না।
খলিল আল-হাইয়া বলেন, গাজা যুদ্ধের স্থায়ী অবসান, ইসরাইল কর্তৃক বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজার পুনর্গঠনের বিনিময়ে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে আটক বাকি সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে অবিলম্বে ‘বিস্তৃত প্যাকেজ আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত।
নেতানিয়াহু ও তার সরকার রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ হিসেবে গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে চায় বলেও অভিযোগ করেন হামাসের এই নেতা।
তিনি বলেন, স্বল্পমেয়াদী যে কোনো চুক্তি নেতানিয়াহুর গণহত্যাকে লুকিয়ে রাখার কৌশল হবে। যতদিন ফিলিস্তিনের ভূমি দখলে রাখবে ইসরাইল, ততদিন অস্ত্র হাতে রাখবে হামাস।
এদিকে বৃহস্পতিবার গাজাজুড়ে ইসরােইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হওয়ার পর শুক্রবার সকালে খান ইউনিসের একটি বাড়িতে ইসরাইলি হামলায় ১৩ জনের একটি পরিবারের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে ফুঁসছে ইসরাইলিরাও। ‘রিস্টার্ট ইসরাইল’ নামের প্ল্যাটফর্মে এক লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ যুদ্ধ ও বন্দিমুক্তির দাবিতে ৪৩টি পিটিশনে সই করেছেন। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন, সেনা, গোয়েন্দা সদস্য, লেখক, শিল্পী, এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক ও কয়েকজন সেনাপ্রধানও।
দীর্ঘ ১৫ মাস যুদ্ধের পর গত ১৯ জানুয়ারি কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এটি ছিল তিন পর্বের। প্রথম পর্বে ছিল যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি-বন্দি বিনিময় শুরু করা, দ্বিতীয় পর্বে ছিল জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের কাজ শেষ করা এবং গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, তৃতীয় পর্বে ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে পুনর্গঠন।
তবে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ না করে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। ইসরাইলের ফের শুরু করা এই হামলায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া অভিযান শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে খাদ্য ও অন্যান্য জরুরি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দিচ্ছে না দখলদার বাহিনী।