ডেস্ক রিপোর্ট: গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে জিম্মি বিনিময় হবে না বলে জানিয়েছেন হামাসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান খলিল আল-হায়া। বুধবার (২০ নভেম্বর) আল-আকসা টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
আল-হায়া বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ না হলে জিম্মি মুক্তি নিয়ে কোনও আলোচনা হতে পারে না। যদি ইসরায়েলি আগ্রাসন শেষ না হয়, তবে বন্দিদের ফিরিয়ে দেওয়ার কোনও কারণ নেই হামাসের। কারণ যুদ্ধ চলাকালীন কেউ তার শক্তিশালী অস্ত্র ত্যাগ করে না।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। বুধবার জাতিসংঘে উত্থাপিত নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির কথা উল্লেখ নেই এমন কোনও প্রস্তাবে সমর্থন দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিনিধি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আলোচনায় অচলাবস্থার জন্য দায়ী করে আল-হায়া বলেছেন, যুদ্ধবিরতির আলোচনা এগিয়ে নিতে ইসরায়েলের বাস্তব ইচ্ছা প্রমাণ করা জরুরি। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, আলোচনা ফলপ্রসূ করতে ব্যর্থ করছেন নেতানিয়াহু।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার আপাতত কোনও প্রচেষ্টা চালাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। তাদের দাবি, হামাস ও ইসরায়েল উভয়পক্ষই যথেষ্ট আন্তরিক না হলে তারা মধ্যস্থতায় আর আসছে না।
কাতারের এক মুখপাত্র বলেছেন, দোহায় হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় এখনও চালু রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কাতারকে কার্যালয়টি বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছে।
মিসর প্রস্তাব করেছে, গাজার প্রশাসনিক দায়িত্ব ভাগাভাগি করতে হামাস ও ফাতাহ একটি প্রশাসনিক কমিটি গঠন করতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
মঙ্গলবার গাজায় সফর করেছেন নেতানিয়াহু। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, হামাস আর কখনও গাজা শাসন করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেছেন, ইসরায়েল এখনও গাজায় আটক ১০১ জন জিম্মি মুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মুক্তির জন্য জনপ্রতি ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছেন তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫০ জনের বেশি অপহৃত হয় বলে ইসরায়েল দাবি করে আসছে।
ওই হামলার জবাবে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সামরিক আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ নিহত ও ১ লাখ ৩ হাজার ৮৯৮ জন আহত হয়েছেন। মারাত্মক খাদ্য, পানি ও জ্বালানি সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

Discussion about this post