Print Date & Time : 10 September 2025 Wednesday 12:59 am

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আর আলোচনায় বসার কোনো অর্থ নেই: হামাস

ডেস্ক রিপোর্ট: ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধা ও গণবিধ্বংস যুদ্ধ’ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনে গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে আর আলোচনায় বসার কোনো অর্থ নেই বলে জানিয়েছে হামাস। মঙ্গলবার (৬ মে) এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ও গাজার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাসেম নাঈম।

তিনি বলেন, ‘গাজা উপত্যকায় ক্ষুধার যুদ্ধ এবং গণহত্যার যুদ্ধ যতদিন চলবে, ততদিন নতুন কোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসার কোনো মানে নেই।’’

নাঈম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে এই ‘ক্ষুধা, পিপাসা ও হত্যাযজ্ঞ’ বন্ধ করতে বাধ্য করতে।

হামাস নেতার এই মন্তব্য ইসরাইলের সাম্প্রতিক এক ঘোষণার পর এসেছে, যেখানে তারা গাজাজুড়ে সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের পরিকল্পনা প্রকাশ করে জানিয়েছে, এ অভিযানে ‘গাজা ভূখণ্ড দখল ও নিয়ন্ত্রণ’ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এক ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেন, এতে গাজার ‘অধিকাংশ মানুষকে স্থানচ্যুত’ করা হবে।

ইতোমধ্যে হামলার শুরু থেকে গাজার প্রায় সমস্ত বাসিন্দাই একাধিকবার স্থানচ্যুত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইলে হামলার পর এই যুদ্ধ শুরু হয় এবং ২ মার্চ থেকে গাজা পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইল, ফলে সেখানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

গত ১৮ মার্চে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি শেষ করে ইসরাইল আবার হামলা শুরু করে। গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, আজ মঙ্গলবার ভোরে ইসরাইলি হামলায় এক শিশুসহ তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এই নতুন অভিযানের পরিকল্পনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন।

মহসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘এই পরিকল্পনার ফলে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এবং গাজার আরও ধ্বংস অনিবার্যভাবে ঘটবে। গাজা অবশ্যই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ থাকতে হবে।’

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ইসরাইলের এই পরিকল্পনা গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

ফিলিস্তিনিদের জন্য এই ধরণের জোরপূর্বক স্থানান্তর ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় ঘটে যাওয়া ‘নাকবা’ বা বিপর্যয়ের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে, যাকে তারা গণচ্যুতির ইতিহাস হিসেবে দেখে।

গাজাভিত্তিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইলি অভিযানে আরও ২,৪৫৯ জন নিহত হয়েছে, ফলে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২,৫৬৭ জনে।