ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্ট শহরে একটি নাচের কর্মশালায় ছুরি হামলায় তিন শিশু নিহত হওয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে ১৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক বর্ণবাদী দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই হামলার জন্য এক মুসলিম শরণার্থী দায়ী, অনলাইনে এমন গুজব ছড়িয়ে দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটানো হয়েছিল।
২৯ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ওই দাঙ্গা ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহরের পাশাপাশি উত্তর আয়ারল্যান্ডেও ছড়িয়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষ এ দাঙ্গায় জড়িতদের চিহ্নিত করার পদক্ষেপ জোরদার করার পর গত সপ্তাহ থেকে সহিংসতা কমতে শুরু করে।
রয়টার্স জানিয়েছে, অনেককে আটক করে দ্রুত কারাগারে পাঠানো হয়, তাদের কিছু অংশ দীর্ঘ মেয়াদি কারাদণ্ড পান।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল পুলিশ চিফস’ কাউন্সিল জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরে চলা দাঙ্গার সময় সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার পাশাপাশি মুসলিম ও অভিবাসীদের লক্ষ্য করে বর্ণবাদী হামলার ঘটনা ঘটেছে, এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত হাজারেও বেশি দাঙ্গাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে তারা জানায়, পুরো যুক্তরাজ্যজুড়ে ১০২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে এদের মধ্যে ৫৭৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৬৯ বছর বয়সী বৃদ্ধ থেকে শুরু করে ১১ বছরের বালক পর্যন্ত আছে। ভাংচুরের অভিযোগে ওই বৃদ্ধকে লিভারপুল থেকে এবং শিশুটিকে বেলফাস্ট থেকে আটক করা হয়।
৩১ জুলাই বেইসিংস্টোকে শরণার্থীদের জন্য বরাদ্দ করা একটি হোটেলের প্রবেশপথে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ঘুষি মারতে ও লাথি দিতে দেখা যায়, পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই কিশোরী বেইসিংস্টোক হাকিম আদালতে সহিংস বিশৃঙ্খলার জন্য নিজের দোষ স্বীকার করেছেন বলে সরকারি কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন।
এর আগে শেষবার ২০১১ যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছিল। সেসময় পুলিশের গুলিতে একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর বেশ কয়েকদিন ধরে ব্রিটেনের রাস্তাগুলোতে ব্যাপক দাঙ্গাহাঙ্গামা হয়।
দ্রুত ও কঠোর বিচারিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ওই দাঙ্গা দমন করা সম্ভব হয়েছিল। তখন কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চার হাজারের মতো মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Discussion about this post