ডেস্ক রিপোর্ট: মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র, ফেডারেল স্বাস্থ্য বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) টিকাসংক্রান্ত সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা সংগঠন। মামলায় দাবি করা হয়েছে, কোভিড টিকার ওপর নতুন সীমাবদ্ধতা বিজ্ঞানসম্মত নয় এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ম্যাসাচুসেটসের একটি ফেডারেল আদালতে করা মামলাটি স্বাস্থ্যবান শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য কোভিড টিকাকে আবারও সুপারিশ করা টিকার তালিকায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়েছে। মামলার বাদীদের মধ্যে আমেরিকান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন, আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস, ইনফেকশাস ডিজিজ সোসাইটি, আমেরিকান কলেজ অব ফিজিশিয়ানসসহ আরও কয়েকটি শীর্ষ চিকিৎসা সংস্থা রয়েছে। বাদী তালিকায় ‘জেন ডো’ নামের এক গর্ভবতী নারীর নামও রয়েছে, যিনি করোনার টিকা নিতে পারেননি বলে দাবি করেছেন।
গত মে মাসে রবার্ট কেনেডি ঘোষণা দিয়েছেন, সিডিসি এখন থেকে আর স্বাস্থ্যবান শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য কোভিড টিকা সুপারিশ করবে না। অথচ বছরের পর বছর ধরে গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভবতী নারীরা কোভিডে সংক্রমিত হলে মারাত্মক অসুস্থতা, গর্ভপাত ও মৃত সন্তান প্রসবের ঝুঁকিতে পড়েন।
আমেরিকান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ড. জর্জেস বেঞ্জামিন বলেছেন, একজন গর্ভবতী নারী স্বভাবতই রোগ প্রতিরোধে দুর্বল হন। এই সিদ্ধান্ত স্বাভাবিক পদ্ধতি মেনে নেওয়া হয়নি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে নেওয়া হয়েছে। মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, কেনেডি ও তার নিযুক্ত ব্যক্তিরা টিকাব্যবস্থাকে নানাভাবে দুর্বল করছেন। তিনি সিডিসির ১৭ জন টিকা বিশেষজ্ঞকে বরখাস্ত করেছেন এবং তাদের স্থানে এমন ব্যক্তিদের বসিয়েছেন, যারা অনেক সময় টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এমনকি নতুন নিয়োগ পাওয়া একজন সদস্য আর্থিক স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে প্রথম বৈঠকের আগেই সরে দাঁড়ান।
আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস এই বৈঠক বর্জন করে বলেছে, ‘আমরা আমাদের নাম বা অভিজ্ঞতা এমন এক ব্যবস্থায় ব্যবহার হতে দেব না, যেখানে শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। মামলায় আদালতের কাছে দাবি জানানো হয়েছে, কোভিড টিকাকে যেন আবারও সরকারি টিকার সূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আর আইনি প্রক্রিয়া যেন নিশ্চিত করা হয়। ড. বেঞ্জামিন বলেন, বিজ্ঞানের ভিত্তি ছাড়া সিদ্ধান্ত নিলে তা চিকিৎসাবিদ্যার অননুমোদিত চর্চার শামিল হয় এবং এতে জনসাধারণের ক্ষতি হয়।

Discussion about this post