ডেস্ক রিপোর্ট: কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ফুঁসছে গোটা দেশ। সঠিক তদন্ত ও বিচারের দাবিতে ভারতজুড়ে ২৪ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) এই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। দশম দিনের মতো এ আন্দোলন চলছে।
আইএমএ জানিয়েছে, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত সব ধরনের নন-ইমারজেন্সি মেডিকেল সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়েছে। কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের নামিদামি হাসপাতালে এই কর্মবিরতির প্রভাব পড়েছে।
চিকিৎসকরা দাবি তুলেছেন, নারী চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়া আইএমএ আবাসিক চিকিৎসকদের নিরাপদ থাকার জায়গার ব্যবস্থা, আর জি কর হাসপাতাল চত্বরে ভাঙচুরে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে তারা।
শুক্রবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রুমালিকা কুমার বলেন, অস্বচ্ছতার কারণেই কলকাতা পুলিশ থেকে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আমাদের ন্যায়বিচারের দাবি আদৌ পূরণ হয়নি। চলমান তদন্ত সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো স্পষ্টতা নেই।
রিয়া বেরা বলেন, আমরা যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি, সিবিআইয়ের কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি চাইছি, লিখিত ক্ষমা চাইতে হবে তাদের এবং সাবেক অধ্যক্ষসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পদত্যাগ দাবি করছি।
মূলত ওই চিকিৎসকের খুনের ঘটনার যথোপযুক্ত তদন্ত এবং বিচারের দাবি জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি, হাসপাতালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টিও তুলে ধরা হচ্ছে। চিকিৎসকদের দাবি, নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কাজে যোগ দেবেন না তারা। একই চিত্র পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালগুলোতেও।
আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার রুমালিকা কুমার ও রিয়া বেরা অসন্তোষ প্রকাশ করে হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, তাদের ন্যায়বিচারের দাবি এখনো পূরণ হয়নি। উপযুক্ত প্রমাণসহ সব দোষীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি আমরা।
উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন নারী চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথ। চিকিৎসক হত্যার প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ। এসব কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে হাজার হাজার মানুষ নেমেছেন রাজপথে। সারা দেশের চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছেন।

Discussion about this post