ডেস্ক রিপোর্ট: ব্রিটেনের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ প্রতিরক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল কলেজ অফ ডিফেন্স স্টাডিজে আগামী বছর থেকে ইসরাইলিদের ভর্তি নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার। সিদ্ধান্তটি গাজার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আমীর বারাম, যিনি আগে এই কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন, এই পদক্ষেপকে ‘একটি মর্যাদাহীন ও বন্ধুত্বের ব্যাঘাত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
তিনি বলেন, এটি ‘বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত যা ব্রিটেনের সহনশীলতা এবং ন্যায়পরায়ণতার ঐতিহ্যের সঙ্গে বিরোধী।’
রয়্যাল কলেজ জানিয়েছে, তাদের আন্তর্জাতিক কৌশলগত শিক্ষা কোর্সে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, নিরাপত্তা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর গভীর বিশ্লেষণ করা হয়। তবে মূল কোর্সটি ‘প্রায়োগিক’ ধাঁচের। প্রতি বছর প্রায় ১১০ জন শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্য ও বিভিন্ন দেশের থেকে এই প্রোগ্রামে ভর্তি হন। উল্লেখযোগ্য সাবেক শিক্ষার্থীর মধ্যে আছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইম্পেরিয়াল জেনারেল স্টাফের প্রধান ফিল্ড মার্শাল এলান ফ্রান্সিস ব্রুক এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ।
বারামের মতে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এমন সময়ে যখন ইসরাইল হুথি হুমকির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জলপথ রক্ষা করছে, পারমাণবিক অস্ত্র ইসলামী চক্রের হাতে পড়া প্রতিরোধ করছে এবং হামাসের বন্দি ৪৮ জনকে মুক্ত করার জন্য লড়াই করছে।
তিনি বলেন, ‘ইসরাইলিদের বের করে দেওয়া ব্রিটিশ নিরাপত্তার স্ব-ধ্বংসের সমতুল্য।’
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ চালিয়ে আসছে এবং সব কোর্স আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলে।
তবে মন্ত্রণালয় এই উল্লেখ করেছে, ‘গাজার সামরিক অভিযানের আরও তীব্রতা বাড়ানো ইসরাইল সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।’
তারা অবিলম্বে সমঝোতা ও তাত্ক্ষণিক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়াও, ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি ইসরাইলি কর্মকর্তাদের দেশটির বৃহত্তম অস্ত্র প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে এবং গত বছরে ৩৫০টি অস্ত্র রপ্তানি লাইসেন্সের মধ্যে ৩০টি স্থগিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সতর্ক করেছেন, যদি ইসরাইল গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না করে এবং পশ্চিম তীর দখল না থামে, তবে ব্রিটেন জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেবে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই পদক্ষেপকে নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এটি হামাসকে পুরস্কৃত করার সমতুল্য এবং ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ শুধু হামাসকে উৎসাহিত করবে।
এদিকে গাজায় বন্দি থাকা নাগরিকদের মুক্তির জন্য কাজ করা প্রধান ইসরাইলি সংস্থা জানিয়েছে, বন্দি মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুই মূল প্রতিবন্ধকতা। সংস্থার বরাতে বলা হয়েছে, ‘(হামাসের সঙ্গে) প্রতিটি সম্ভাব্য সমঝোতা নেতানিয়াহুর দ্বারা ব্যাহত হয়েছে।’

Discussion about this post