ডেস্ক রিপোর্ট: পাকিস্তানের সাবেক আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদকে (অব.) হেফাজতে নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। দেশটির ‘টপ সিটি’ আবাসন প্রকল্প কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাঁর সামরিক আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আজ সোমবার পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া আদেশের আলোকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদকে (অব.) হেফাজতে নিয়েছে সেনাবাহিনী। টপ সিটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটির সঠিকতা নিশ্চিত করতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আইনের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা শুরু করা হয়েছে।’
পাকিস্তানে এর আগে ইন্টার–সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) কোনো প্রধানকে কখনো সামরিক আদালতে বিচার করা হয়নি। দেশটিতে সেনাপ্রধানের পর আইএসআইয়ের প্রধানকেই সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়।
ফয়েজ হামিদের বিরুদ্ধে অবসর–পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আইন লঙ্ঘনের একাধিক ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইএসপিআরের বিবৃতিতে। কিন্তু তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ফয়েজ হামিদ ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইএসআইয়ের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য পশ্চিমা সেনারা আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার কিছুদিন পরই দেখা যায় কাবুলের একটি হোটেলের লবিতে বসে তিনি চা পান করছেন। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁকে নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়। ২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে হামলার পর থেকে ওয়াশিংটন অভিযোগ করে আসছিল তালেবানের পেছনে পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সমর্থন রয়েছে।
পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলো মনে করে, ইমরান খান হামিদকে আরেক মেয়াদে আইএসআইয়ের প্রধান রাখতে চেয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইমরানের সেসব বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে এটা অন্যতম।
ফয়েজ হামিদকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচনা করা হয়। ইমরান খানই তাঁকে আইএসআইয়ের প্রধান করেছিলেন।
২০২২ সালে ইমরান খান অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন। খানের অভিযোগ, তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার ব্যাপারে সেনাবাহিনীর হাত রয়েছে।

Discussion about this post