Print Date & Time : 21 April 2025 Monday 7:53 am

বাংলাদেশের পলাতক স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনা সরকার নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া ও জনমতের ক্ষোভ বাড়ছে

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে ভারতের গণমাধ্যম এবং সাধারণ মানুষের মাঝে স্পষ্ট ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বাংলাদেশের পলাতক স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনার শাসনামলে দুর্নীতি, রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার চিত্র উঠে এসেছে।

ভারতের জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ প্রকাশিত একটি কলামে ভারতীয় সাংবাদিক সুচিন্তা পাল চৌধুরী তাঁর ঢাকায় অবস্থানের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ সফরে এসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি লেখেন—আজ শুধু বিরোধীরা নয়, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীও বাংলাদেশের পলাতক স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাহীন।

প্রতিবেদনের শুরুতেই লেখক একটি সংবেদনশীল বাক্যে ইঙ্গিত দেন—”মেয়েটার জন্য কলঙ্কিত হলেন বাবা”, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও বর্তমান শাসনের মধ্যে এক ধরনের হতাশাজনক ব্যবধান তুলে ধরে।

সুচিন্তা পাল উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে বর্তমানে রাজনৈতিক স্বাধীনতা প্রায় নেই বললেই চলে। প্রশাসনিক দুর্বলতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিরোধী মতের দমন এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজনের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি লেখেন, “আওয়ামী লীগ বারবার আমাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে, কিন্তু সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করেছেন, কিছু হিন্দু মন্দিরে হামলার পেছনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মদদ থাকারও প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে, একইসঙ্গে প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয়েছে—নতুন অন্তর্বর্তী সরকার এবং সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকার ফলে দেশে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে।

ধর্মীয় উগ্রবাদের বিষয়টি টেনে লেখক বলেন, “শুধু রাজনীতি টিকিয়ে রাখতেই শেখ হাসিনা ধর্মকে রাজনৈতিক অস্ত্র বানিয়েছেন”— এমন কথাই এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ফিরছে।

একসময় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এমন অনেকেই এখন রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। প্রতিবেদনে এক প্রবীণ নাগরিক গাজী সাহেবের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে: “আগে রাজনীতির সঙ্গে ছিলাম, এখন আর বাড়ির বাইরে যাই না।” চোখে জল নিয়ে তিনি বলেন, _”এই দেশটা এমন হতাশাজনক হবে, ভাবিনি কখনো।”_

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বাংলাদেশ ও ভারতের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলছেন, প্রতিবেশী দেশের মিডিয়ার এই অবস্থান ভবিষ্যতে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।