Print Date & Time : 5 August 2025 Tuesday 10:48 am

বাংলাকে বাংলাদেশি ভাষা বলায় ভারতজুড়ে বিতর্ক

ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলা ভাষা ও বাঙালি পরিচয় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। দিল্লি পুলিশের একটি সরকারি চিঠিতে বাংলাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা উল্লেখ করা হয়েছে। এ নিয়ে ভারতজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, লোদী কলোনি থানার পুলিশ কর্মকর্তা অমিত দত্তের বঙ্গভবনের অফিসার ইনচার্জের কাছে পাঠানো চিঠিতে বাংলাকে বাংলাদেশির ভাষা উল্লেখ করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস বলছে, এটি ভাষাগত অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি একে সরাসরি ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তফসিল এবং ৩৪৩ ধারার লঙ্ঘন বলে চিহ্নিত করেছেন।

অভিষেক বলেন, বাংলা শুধু ভাষা নয়, এটি আমাদের পরিচয়, সংস্কৃতি এবং অস্তিত্ব। বাংলাকে বিদেশি ভাষা বলা একটি গভীর চক্রান্ত। বাঙালিকে নিজেদের দেশেই বহিরাগত প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, এই চিঠি কোনো ভুল নয়, এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক পদক্ষেপ। এ চক্রান্ত বাংলাভাষার ভারতীয় পরিচয় মুছে ফেলতে চায়। বিজেপি বরাবরই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিষ ছড়িয়েছে। এবার দিল্লির পুলিশ দিয়ে সেটাকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করছে।

বিজেপি যদিও এ ঘটনার ভুল মানতে নারাজ। রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য— বাংলাদেশিদের বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলা আলাদা। শুধু বাংলা বললেই কেউ ভারতীয় হয়ে যায় না। আমরা এটা মানি না যে ভাষা দেখে কারো নাগরিকত্ব নিশ্চিত হবে।

তিনি বলেন, নকল পরিচয়পত্র নিয়ে বহু বাংলাদেশি এখন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ছে। এটা রুখতেই এমন ব্যবস্থা।
বিশ্বজুড়ে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ বাংলায় কথা বলেন। এটি ভারতের সংবিধান স্বীকৃত অন্যতম প্রাচীন ও মর্যাদাসম্পন্ন ভাষা।

তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, বাংলা ভাষা নিয়ে এমন বিতর্ক এই প্রথম নয়। কিন্তু দিল্লি পুলিশের সরকারি চিঠিতে এ ধরনের মন্তব্য প্রমাণ করে, আজও ভারতবর্ষে বাঙালিকে পরিচয়ের লড়াই লড়তে হচ্ছে— নিজের ভাষা ও মাতৃভূমির প্রাপ্য সম্মান পেতে।