Print Date & Time : 6 May 2025 Tuesday 2:20 am

পেরুতে অপহরণের পর সোনার খনিতে মিলল ১৩ শ্রমিকের মরদেহ

ডেস্ক রিপোর্ট: পেরুতে একটি সোনার খনির ভেতর কয়েক দিন আগে অপহৃত ১৩ খনিশ্রমিকের মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নিহতরা রাজধানী লিমার উত্তরে পাতাজ প্রদেশে অবস্থিত ওই খনিতেই কাজ করতেন, যার মালিক পেরুর খননকারী কোম্পানি পোদেরোসা।

বিবিসি জানায়, ওই এলাকায় অবৈধ খননে জড়িত একদল লোককে মোকাবেলা করতে এই ১৩ শ্রমিককে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু সোনার খনিটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া একটি অপরাধী চক্র তাদের অপহরণ করে।

চক্রটি অপহৃত শ্রমিকদের খনির একটি সুড়ঙ্গের ভেতর জিম্মি করে রাখে এবং টানা এক সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের আত্মীয়দেরকে হুমকিমূলক বার্তা পাঠায়।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে পোদেরোসা বলেছে, অবৈধ খনন রোধে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা হতাশ। অঞ্চলটির সহিংস পরিবেশ ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে ওই ১৩ শ্রমিককে গুলি করে হত্যার দৃশ্য আছে বলে জানিয়েছে পেরুর সংবাদমাধ্যম দিয়ারিও কোররেও; অপহরণকারীরাই ওই ভিডিওটি রেকর্ড করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম এই ১৩ জনকে পোদেরোসার নিয়োগ করা নিরাপত্তাকর্মীও বলছে। কেন ওই শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছে তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
২০২০ সাল থেকে পোদেরোসা পরিচালিত একাধিক খনি অবৈধ খননকারীদের দখলে চলে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কোম্পানিটিকে কিছু কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হয়েছে।

গত কয়েক বছর ধরে পেরুর বিভিন্ন খনিতে অপরাধীদের হামলার তীব্রতা বেড়েছে। চলতি বছরের মার্চেই পাতাজ জেলার লা সিয়েনাগা গিরিখাতের কাছে খনিতে ঠিকাদারদের ওপর হামলা চালিয়ে দুই জনকে হত্যা করেছিল অবৈধ খননকারীদের সঙ্গে থাকা অপরাধীরা।

একই মাসে অবৈধ খননকারীরা খনিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা একটি উচ্চ-ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক টাওয়ার উড়িয়ে দিয়েছিল এবং খননকাজ চলে এমন কিছু জায়গা ‘দখলের’ চেষ্টা করেছিল।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ব্যর্থ হয়েছে জানিয়ে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে পোদেরোসা। কোম্পানিটি বলছে, ওই এলাকায় অবৈধ খনন ও সংঘবদ্ধ অপরাধ ‘পুরোপুরি দায়মুক্তি’ নিয়ে চলছে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম স্বর্ণ উৎপাদক দেশ পেরু প্রতি বছর ১০০ টনের বেশি সোনা উত্তোলন করে, যা সমগ্র বিশ্বের বার্ষিক সরবরাহের প্রায় ৪ শতাংশ।