ডেস্ক রিপোর্ট: চলতি জুলাই ও আসন্ন আগস্টে তিন দিনের জন্য পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি কিছুটা বেড়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর ফলে ওই তিন দিনে দিনের দৈর্ঘ্য স্বাভাবিকের চেয়ে অল্প পরিমাণে কমবে। খবর এনডিটিভির।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৯ জুলাই, ২২ জুলাই এবং ৫ আগস্ট—এই তিনটি দিনে পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি সামান্য বেড়ে যাবে। যার কারণে ৫ আগস্টে দিনের দৈর্ঘ্য কমে যেতে পারে প্রায় ১.৫১ মিলিসেকেন্ড।
যদিও এই পার্থক্য খুব সামান্য, তবুও সময়ের নিখুঁত হিসাব রাখার জন্য এ ধরনের পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন গবেষকরা।
বর্তমানে পৃথিবী প্রতি বছরে তার অক্ষরেখার চারপাশে প্রায় ৩৬৫.২৫ বার আবর্তিত হয়। কিন্তু গবেষণায় উঠে এসেছে, অতীতে পৃথিবী একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সময় নিত ৩৭২ থেকে ৪৯০ দিন পর্যন্ত। এর মানে হলো, পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি সময়ের সঙ্গে বদলেছে এবং এখনো বদলে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে পৃথিবীর ভরের বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে, যা ঘূর্ণন গতিতে প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া এল নিনো ও লা নিনার মতো জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত ঘটনাও পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি বাড়াতে বা কমাতে পারে।
মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির ঘূর্ণন বিশেষজ্ঞ ড. লিওনিড জোটভ বলেন, ঘূর্ণনের এই পরিবর্তনের কারণ এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন, ‘সমুদ্র এবং বায়ুমণ্ডলীয় মডেল দিয়ে এই ব্যতিক্রম ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না। অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা, এটি পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কোনো পরিবর্তনের ফল।’
তিনি আরও জানান, ২০২৫ সালে বছরের সবচেয়ে ছোট দৈর্ঘ্যের দিন হতে পারে, যখন চাঁদ পৃথিবীর বিষুবরেখা থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থান করবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর ঘূর্ণনের এ ধরনের পরিবর্তন আন্তর্জাতিক সময় ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে। এই কারণে ২০২৯ সালে বিশ্বের সময় ব্যবস্থায় প্রথমবারের মতো ‘লিপ সেকেন্ড’ বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হতে পারে।