ডেস্ক রিপোর্ট: পৃথিবীতে শুরু থেকে পানি ছিল, নাকি বাইরের কোনো উৎস থেকে পানি এসেছে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। কোনো কোনো বিজ্ঞানীর ধারণা, পৃথিবীতে প্রথম জীবের আবির্ভাব হওয়ার আগেই পানির উপস্থিতি ছিল। আবার কারও ধারণা, সৌরজগতে থাকা গ্রহাণুর মাধ্যমে পানি এসেছে পৃথিবীতে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রুটজার্স বিশ্ববিদ্যালয় নিউ ব্রান্সউইকের একদল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, পৃথিবীতে পানি আগের ধারণার চেয়ে অনেক পরে এসেছে। পৃথিবী তার গঠনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পানি পেয়েছে। নতুন এই আবিষ্কার পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশের ক্ষেত্রে নতুন তথ্য দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পৃথিবীতে পানির উৎসের সময় বিষয়ে বিজ্ঞানী ক্যাথরিন বার্মিংহাম বলেন, ‘পৃথিবীতে কখন পানি এসেছে, তা গ্রহবিজ্ঞানের জন্য একটি উত্তরহীন প্রশ্ন। যদি আমরা উত্তরটি জানি, তাহলে জীবন কখন ও কীভাবে বিকশিত হয়েছিল, তা আমরা আরও ভালোভাবে জানতে পারব। নতুন গবেষণা বলছে, পৃথিবী গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে পানির উপস্থিতি ছিল না। অনেক পরে পানির সন্ধান মেলে পৃথিবীতে।’
পৃথিবীর প্রাথমিক রাসায়নিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি থেকে উল্কাপিণ্ডের নমুনা পরীক্ষা করেছেন বিজ্ঞানীরা। সেই উল্কাপিণ্ডে থাকা মলিবডেনাম আইসোটোপ নতুন কৌশলে পরীক্ষা করেন তাঁরা। মলিবডেনামের আইসোটোপ পৃথিবীর ভূত্বক ও উল্কাপিণ্ড উভয়ের মধ্যেই পাওয়া যায়। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী বার্মিংহাম বলেন, ‘পৃথিবীর শিলার মলিবডেনাম আইসোটোপ সংমিশ্রণ আমাদের পৃথিবীর মূল গঠনের সময় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার তথ্য প্রদান করে। সে সময় পৃথিবীর শেষ ১০ থেকে ২০টি উপাদান একত্র হচ্ছিল।’
বিজ্ঞানীরা সৌরজগতে উৎপত্তিস্থলের ভিত্তিতে উল্কাকে দুটি প্রধান দলে শ্রেণিবদ্ধ করেন। সিসি উল্কাপিণ্ডরা এসেছে সৌরজগতের বাইরে থেকে। আর এনসি উল্কাপিণ্ডের উৎপত্তি অভ্যন্তরীণ সৌরজগতে। গবেষণায় এনসি গ্রুপের উল্কাপিণ্ড বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পৃথিবীর শিলায় থাকা মলিবডেনাম আইসোটোপের সঙ্গে এনসি উল্কাপিণ্ডে থাকা মলিবডেনামের বেশ মিল রয়েছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী বার্মিংহাম বলেন, ‘আমাদের সৌরজগতে পৃথিবীর বিল্ডিং ব্লক বা গঠন উপাদানের ধূলিকণা ও গ্যাস কোথা থেকে এসেছিল ও কী ঘটেছিল, তা খুঁজে বের করতে হবে।’
খবর : আর্থ ডটকম

Discussion about this post