ডেস্ক রিপোর্ট: কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলার জেরে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। হামলা পালটা-হামলায় বাড়ছে বৃহত্তর সংঘাতের ঝুঁকি। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক নেতারা দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে এবং সম্ভাব্য বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরব পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে দুটি প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। দুদেশের প্রচেষ্টা বেশ লক্ষণীয়। সৌদি আরব তার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়েরকে অঘোষিত সফরে নয়াদিল্লিতে পাঠিয়েছে।
অন্যদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পরে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে টেলিফোন করেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আঞ্চলিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়নি বিবৃতিতে।
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনার বৃদ্ধি রোধ করতে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
সৌদি আরবের ভূ-কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে বৃহত্তর সংঘাতের সৃষ্টি হলে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
সূত্র অনুসারে, পাকিস্তান সৌদি ও মার্কিন মধ্যস্থতাকারীদের বলেছে, ইসলামাবাদ কখনোই উত্তেজনা বৃদ্ধি চায়নি। বর্তমান সংকটের জন্য তারা সরাসরি নয়াদিল্লিকে দায়ী করেছে।
সূত্র আরও জানিয়েছে, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরব উভয়কেই অনুরোধ করেছে, ভারতকে তার পথ পরিবর্তন করতে হবে এবং চুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হবে।
দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার বুধবার নিশ্চিত করেছেন, পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল অসীম মালিক তার ভারতীয় প্রতিপক্ষ অজিত দোভালের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। সামরিক অভিযানের মহাপরিচালকও তাদের হটলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ রেখেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরব উভয় পক্ষকে অন্তত সংকটের সময়েও একে অপরের সাথে কথা বলতে রাজি করিয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারায়। এই হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেশটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে পাকিস্তানে বেশ কয়েকজন হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিশোধে পালটা হামলা চালিয়ে ভারতের বেশ কয়েকটি বিমান এবং ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।

Discussion about this post