ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ পদত্যাগ করেছেন। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল পাল্টে দেওয়ার চক্রান্ত ও রাষ্ট্রীয় গোপন নথি অপব্যবহারের অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিক প্রত্যাবর্তনের আগেই শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) পদত্যাগ করলেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জাজ আইলেন ক্যাননের কাছে শনিবার (১১ জানুয়ারি) প্রেরিত আদালতের নথিতে দেখা গেছে, শুক্রবার বিচার বিভাগ থেকে পদত্যাগ করেছেন স্মিথ। এছাড়া তার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
আদলতের নথির একটি পাদটীকাতে স্মিথের পদত্যাগের বিষয়ে জানা যায়। সেখানে বলা হয়েছে, নিজের কাজ সম্পন্ন করে ৭ জানুয়ারি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে ১০ জানুয়ারি বিচার বিভাগের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলেছেন তিনি।
আগে যুদ্ধাপরাধের মামলা লড়তেন স্মিথ। ক্ষমতা ছাড়ার পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত চারটি ফৌজদারি মামলার দুটি ছিল তার করা। তবে ফ্লোরিডা আদালতে ট্রাম্পের নিযুক্ত বিচারক খারিজ করে দিলে একটি মামলা স্থগিত হয়ে যায়। আর আরেকটি মামলা খারিজ করে দেন মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের নিযুক্ত তিন বিচারপতি। দুটি মামলার কোনওটির শুনানি হয়নি।
ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টদের বিরুদ্ধে মার্কিন বিচার বিভাগে মামলা করা যায় না বলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর দুটি মামলাই প্রত্যাহার করে নেন স্মিথ।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারি মামলাগুলো একে একে খারিজ হয়ে যাচ্ছে। স্মিথের পদত্যাগে সে বিষয়ে আরেকটি মাইলফলক যুক্ত হলো। ফলে কোনও আইনি ঝামেলা ছাড়াই অভিষেক হতে যাচ্ছে তার। হোয়াইট হাউজে আরও শক্তিশালীরূপে প্রত্যাবর্তন করতে যাচ্ছেন তিনি।
বিচার বিভাগ থেকে ট্রাম্পের পদত্যাগ অনুমিতই ছিল। তাকে একাধিকবার ‘বিকৃত মস্তিষ্কের ব্যক্তি’ বলে কটাক্ষ করেছেন ট্রাম্প। এছাড়া, ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা নিলে স্মিথকে তৎক্ষণাৎ চাকরিচ্যুত করার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। এতদিন যারাই তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন, সবাইকে একহাত দেখে নেবেন বলে আগে থেকেই হুমকি দিয়ে আসছেন ট্রাম্প।
২০২৩ সালে ফৌজদারি মামলার সম্মুখীন হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনও সাবেক বা ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট এই পরিস্থিতিতে পড়েন। এর একটি ছিল, ২০১৬ সালে নির্বাচনি প্রচারণার সময় এক পর্ন তারকাকে মুখ বন্ধ রাখতে ঘুষ প্রদানের অভিযোগ। আরেকটি ছিল ২০২০ সালে বাইডেনের কাছে পরাজয়ের পর ভোটের ফল পালটে দেওয়ার চেষ্টায় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথির অপব্যবহার। ওই ঘটনার সূত্র ধরেই ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকরা হামলা চালিয়েছিল।
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post