ডেস্ক রিপোর্ট: ব্যাপক জেন-জি বিক্ষোভের মুখে এবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার বিকালে তার সচিবালয় সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
গত দুই দিন ধরে জেনারেশন জেড (জেন-জি) নেতৃত্বাধীন ব্যাপক গণআন্দোলন দেশজুড়ে তীব্র আকার ধারণ করে। সোমবার ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনের সামনে ও কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত ও ৫০০ জনের বেশি আহত হন।
কাঠমান্ডু ভ্যালিসহ বিভিন্ন স্থানে কারফিউ জারি এবং ব্যাপক নিরাপত্তা মোতায়েনের পরও বিক্ষোভকারীরা রাজপথে নামতে থাকেন। এতে সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়তে থাকে।
এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল-এর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন অলি। চিঠিতে তিনি দেশের বিশেষ পরিস্থিতি স্বীকার করে সাংবিধানিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
পদত্যাগপত্রে অলি লিখেছেন—
“আমি ২০৮১ (নেপালি সাল) সালের ৩১ আষাঢ় (১৪ জুলাই, ২০২৪) সংবিধানের ৭৬(২) ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হই। বর্তমানে দেশে বিরাজমান অস্বাভাবিক পরিস্থিতি এবং সাংবিধানিক রাজনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনে ও সমস্যার সমাধান সহজতর করার লক্ষ্যে সংবিধানের ৭৭(১)(ক) ধারা অনুযায়ী আমি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অবিলম্বে পদত্যাগ করছি।”
বিশ্লেষকদের মতে, অলির পদত্যাগ নেপালের চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও যুবসমাজের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ প্রশমনের একটি বড় মোড় ঘুরানো ঘটনা হয়ে উঠতে পারে।
এদিকে অলি নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রীদের সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে তাদের বাসভবন থেকে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে অন্তত পাঁচটি হেলিকপ্টার এই কাজে নিযুক্ত হয়েছে। কাঠমান্ডু, ললিতপুর ও ভক্তপুরে কারফিউ জারি থাকা অবস্থায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কাঠমান্ডুর দক্ষিণে অবস্থিত ভৈশেপাটির মন্ত্রী আবাসন এলাকা থেকে প্রায় এক ডজন সেনা হেলিকপ্টার কাঠমান্ডু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরঅভিমুখে রওনা হয়েছে, যেখানে মন্ত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এই মুহূর্তে বিমানবন্দরটি এক উত্তেজনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সমর্থকদের আহ্বান জানাচ্ছেন বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটাতে। তারা আতশবাজি ফোটানো, ড্রোন ওড়ানো এবং বিমানের দিকে লেজার লাইট দেওয়ার মতো কাজ করতে কাজ করতে উৎসাহিত করছেন।
খবর : দ্য হিমালয়ান

Discussion about this post