ডেস্ক রিপোর্ট: নেপালে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউডেলও পদত্যাগ করেছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায়, তিনি ‘প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন’। তবে পরে প্রেসিডেন্টের দপ্তর এক বিবৃতিতে এ দাবি অস্বীকার করে। কার্যালয়ের ভাষ্যমতে, পাউডেল এখনও দায়িত্বে আছেন এবং পদত্যাগের খবরটি পুরোপুরি গুজব।
দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জেনারেশন-জি নেতৃত্বাধীন তরুণেরা কারফিউ অমান্য করে দ্বিতীয় দিনের মতো রাস্তায় নেমেছেন। এর মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী অলি পদত্যাগ করেন। গত সপ্তাহে তার সরকার দেশটিতে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। এ সিদ্ধান্তেই দেশজুড়ে তরুণ প্রজন্ম বিক্ষোভ শুরু করে। সহিংসতা চরমে পৌঁছালে মঙ্গলবার ভোরে সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।
এখন পর্যন্ত সহিংসতায় ২০ জনেরও বেশি প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। টালমাটাল পরিস্থিতি ক্ষমতাসীন জোটকে ভাঙনের মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি কয়েকজন মন্ত্রীও পদত্যাগ করেছেন। বড় রাজনৈতিক দলগুলোও জোট সরকারের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ভাবছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনের কিছু অংশে আগুন ধরিয়ে দেন। একইসঙ্গে তারা শীর্ষ নেতাদের বাসভবনে হামলা চালান। লক্ষ্যবস্তু ছিল প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি, প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউডেল, নেপালি কংগ্রেস নেতা শের বাহাদুর দেউবা এবং মাওবাদী নেতা পুষ্প কমল দহলের বাড়ি। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু দেউবা রানার মালিকানাধীন একটি বেসরকারি স্কুলেও আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে স্কুল জ্বলতে দেখা যায় এবং সেখানকার ভেতর থেকে উল্লাসধ্বনি শোনা যায়।
সকাল থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় সামরিক বাহিনী ১২টি উড়োজাহাজে করে মন্ত্রীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। এর মধ্যে ৫টি উড়োজাহাজ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সরিয়ে নিতে ব্যবহার করা হয়।
এদিন দুপুরে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সব ধরনের ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, বিক্ষোভকারীরা ড্রোন, আতশবাজি ও লেজার লাইট ব্যবহার করে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করছে। দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করা হয়। একইসঙ্গে দেশিয় এয়ারলাইনস বুদ্ধ এয়ারসহ অন্যান্য কোম্পানিও ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেয়।