ডেস্ক রিপোর্ট: মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার চাকরি ছাড়ছেন ২০ শতাংশ কর্মী। দ্রুতই তারা সংস্থাটি থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছেন। শুক্রবার (২৫ জুলাই) নাসার এক মুখপাত্র রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত তিন হাজার ৮৭০ কর্মী নাসা ছাড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে মুখপাত্র বলেছেন, এ সংখ্যা আগামী কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহে পরিবর্তিত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এসব কর্মী নাসা ছাড়ার পর সংস্থায় থেকে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা হবে প্রায় ১৪ হাজার।
এদিকে পলিটিকোর বরাতে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নাসার কর্মীদের মধ্যে অন্তত ২ হাজার ৬০০ জনের চাকরি হারানোর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক ঘনিষ্ঠ মিত্র ধনকুবের ইলন মাস্ক রয়েছেন। তিনি সরকারি খরচ কমানোর উদ্দেশ্যে গঠিত নতুন ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগ’- এ দায়িত্ব পালনকালে এসব কর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। পরে তিনি নিজেই এ বিভাগ থেকে সরে দাঁড়ান।
দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত নাসার প্রায় ১২ কোটি ডলারের অনুদান বাতিল করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস আগামী বছরের জন্য সংস্থাটির মোট বাজেটের এক-চতুর্থাংশ কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অনেক মহাকাশ মিশন বাতিল করা হয়েছে এবং ২০২৬ সালে নাসার বিজ্ঞান বাজেটের প্রায় অর্ধেক কাটা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে মহাকাশ অভিযানে প্রাণ হারানো ১৭ নভোচারীকে ‘দ্য ভয়েজার ডিক্লারেশন’ শিরোনামের আনুষ্ঠানিক এ চিঠি উৎসর্গ করা হয়েছে। এতে সতর্ক করে বলা হয়, যদি নাসার বিজ্ঞান গবেষণার অনুদান, কর্মীসংখ্যা ও আন্তর্জাতিক মিশনের ওপর প্রস্তাবিত বাজেট কাটছাঁটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়, তবে এর পরিণতি ভয়ানক হতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, নাসায় বড় কোনো পরিবর্তন আনলে তা ধীরে ও পরিকল্পিতভাবে করা উচিত, যেন ঝুঁকিগুলো ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু গত ছয় মাসে যেভাবে দ্রুত ও অপ্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হয়েছে, তা আমাদের মিশনকে দুর্বল করে দিয়েছে এবং নাসার কর্মীদের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, যখন আমাদের নেতারা মানুষের নিরাপত্তা, বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি ও জনগণের অর্থের সঠিক ব্যবহারের চেয়ে রাজনৈতিক ফায়দাকে বেশি গুরুত্ব দেন, তখন আমাদের মুখ খুলতেই হয়। এই বাজেট কাটছাঁট পরিকল্পনাহীন আর তা কংগ্রেসের অর্থ বরাদ্দ-সংক্রান্ত আইনেরও লঙ্ঘন। এর পরিণতি শুধু নাসার জন্য নয়, পুরো দেশের জন্যই বিপজ্জনক।