Print Date & Time : 20 April 2025 Sunday 5:36 pm

জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক

ডেস্ক রিপোর্ট: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) কিয়েভে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জেলেনস্কিকে নতুন সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তারা। তবে রাশিয়ার অভ্যন্তরে দূরপাল্লার হামলা পরিচালনার বিষয়ে কোনও অগ্রগতি হয়নি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

যুদ্ধে ইউক্রেনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও তা অর্জনে সহায়তার ক্ষেত্র নিয়ে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে এ বৈঠকে।

আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্লিংকেন বলেছেন, ‘দূরপাল্লার গোলাবারুদের পাশাপাশি অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে। ওয়াশিংটন ফিরেই আমি প্রেসিডেন্টকে সবকিছু ব্রিফ করব।’

রাশিয়ার অভ্যন্তরে দূরপাল্লার হামলা চালানোর জন্য মিত্রদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে অনুমতি প্রার্থনা করে আসছেন জেলেনস্কি। এর ফলে মস্কোর আক্রমণের সক্ষমতা কমে আসবে বলে তার বিশ্বাস। হামলায় তিনি মার্কিন এটিএসিএমএস, ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডোসহ পশ্চিমাদের কাছ থেকে পাওয়া ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে চাচ্ছেন। কিন্তু এসব দূরপাল্লার অস্ত্র ইউক্রেন শুধু তার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিতেই ব্যবহার করতে পারবে, এমন শর্ত রয়েছে মিত্রদের পক্ষ থেকে।

সংবাদ সম্মেলনে ল্যামি বলেছেন, ‘সবকিছুই আমরা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যুদ্ধে জয়লাভ করতে ইউক্রেনের প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জামের মতো ইস্যু নিয়েও পর্যালোচনা হয়েছে।’

আলোচনা আরও কয়েক সপ্তাহ চলতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অবশ্য তার এই মন্তব্য ইউক্রেনের জন্য হতাশাজনক, কেননা তারা দ্রুতই পশ্চিমাদের হস্তক্ষেপ চাচ্ছিল।

সংবাদ সম্মেলনের আগে এক প্রশ্নের উত্তরে জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার অভ্যন্তরে দূরপাল্লার হামলা চালাতে মার্কিন ও ব্রিটিশ মিত্রদের সবুজ সংকেত পাওয়া নির্ভর করবে তাদের ‘ইতিবাচক মানসিকতা’র ওপর।

তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা অন্তত কিছু দৃঢ় সিদ্ধান্ত আশা করতে পারি। আমাদের জন্য এখন এটি খুব প্রয়োজন।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে নিজের চ্যানেলে জেলেনস্কি লিখেছেন, আলোচনা বিস্তারিত ও অর্থবহ ছিল। প্রধান সব বিষয় নিয়েই কথা হয়েছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, ইউক্রেনের যুক্তিতে কর্ণপাত করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পরিকল্পিত যুদ্ধকৌশল প্রণয়ন ও সম্মুখ সারিতে দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহের মতো ইস্যু।

এদিকে, দূরপাল্লার হামলা ইস্যুতে দোটানায় আছে ওয়াশিংটনসহ কিয়েভের অন্যান্য মিত্ররা। কেননা, এই অনুমতি দিলে পশ্চিমের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করবে মস্কো। একইসঙ্গে ইউক্রেনের তাৎক্ষণিক একটা সমাধানের প্রয়োজনীয়তাও তারা উপলব্ধি করছে।

দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারে শর্ত শিথিল করা হবে কিনা, জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এখনও সমঝোতার জায়গা রয়েছে। প্রশাসন তা নিয়ে কাজ করছে।

এ বিষয়ে রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার ভিয়াচেসলাভ ভোলোদিন বলেছেন, ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে দূরপাল্লার হামলা চালানোর অনুমতি দিলে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের যুদ্ধের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করবে ক্রেমলিন।

ইউক্রেনের জন্য আরও সামরিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন ব্লিংকেন ও ল্যামি। ব্লিংকেনের ঘোষিত সহায়তার আর্থিক মূল্য প্রায় ৭০ কোটি মার্কিন ডলার। আর প্রায় ৬০ কোটি পাউন্ড (প্রায় ৭৮ কোটি ডলার) দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ল্যামি।