ডেস্ক রিপোর্ট: শীর্ষ জেনারেলরা মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মি অং হ্লাইংকে আটক করেছে বলে যে গুজব ছড়িয়েছে তা অস্বীকার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। বুধবার (১৪ আগস্ট) সেনাবাহিনী বলেছে, এটি একেবারে মিথ্যা ও দেশবিরোধী প্রচার। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের আগে এই ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে জান্তা। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সরকারপন্থি সামরিক সমর্থকদের মধ্যে জান্তা প্রধানের ওপর ক্ষোভ বেড়েছে। কারণ, সরকারি বাহিনী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং অন্যান্য বিরোধীদের কাছে পরাজিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকটি পোস্টে দাবি করা হয়, রাজধানী নেপিদোতে শীর্ষ জেনারেলরা মিন অং হ্লাইংকে আটক করেছেন এবং নেতৃত্ব পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ধরনের গুজব দেশের শান্তি এবং স্থিতিশীলতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হচ্ছে এবং গুজব রটনাকারীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে জান্তা আরও জানায়, রাষ্ট্রপ্রধান ও কর্তৃপক্ষ জাতীয় দায়িত্ব পালনে একযোগে কাজ করছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বুধবার মিয়ানমারে মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। এই সফরের উদ্দেশ্য দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও গভীর করা বলে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।
চীন মিয়ানমারের জান্তার প্রধান মিত্র এবং অস্ত্র সরবরাহকারী হলেও তারা সীমান্তবর্তী জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও সম্পর্ক রক্ষা করছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সম্প্রতি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি জোট শান প্রদেশের উত্তরে জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা দখল করেছে। ওই এলাকা চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্তবর্তী এবং সেখানে প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস।
এটি ছিল জান্তার বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রথম বড় ধরনের সামরিক ঘাঁটি দখল। এই ঘটনায় সামরিক সমর্থকদের মধ্যে বিরল সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
মিন অং হ্লাইং পরে অভিযোগ করেছে, বিদ্রোহীদের জোট বিদেশি উৎস থেকে ড্রোন এবং স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রসহ অস্ত্র পাচ্ছে। তবে তিনি কোনও নির্দিষ্ট দেশের নাম উল্লেখ করেননি।
চীনের শেষ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে মিয়ানমারে সফর করেছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং। তিনি গত বছরের মে মাসে মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
একজন শীর্ষ মিয়ানমার সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চি’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর তাকে আটক করে সেনাবাহিনী।