ডেস্ক রিপোর্ট: ইসরাইলি অবরোধে খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ গাজায়। সেখানে চলছে শুধু মৃত্যুর মিছিল। এক অকল্পনীয় মানবিক বিপর্যয়। শিশুদের মুখে অনাহারের যন্ত্রণা, পুড়ে যাওয়া শরীরে চিকিৎসার অভাব, সে সঙ্গে আহতদের আর্তনাদ। এই মুহূর্তে গাজায় মানবিক সহায়তার তেষ্টা এক চিরকালীন, নিঃশ্বাস না হওয়া আশায় পরিণত হয়েছে। ৫০ দিনেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, এখনো ত্রাণের কোনো অস্তিত্ব নেই গাজায়। ইসরাইলি অবরোধের নির্মমতা এক তীব্র অভিশাপ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে গাজা দুর্ভিক্ষের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার (ওসিএইচএ) প্রধান জোনাথন হুইটল। আলজাজিরা।
হুইটল জানিয়েছেন, ‘ইসরাইলের পূর্ণ অবরোধ গাজাকে ঠেলে দিয়েছে এক শেষ হয়ে যাওয়া বাস্তবতার দিকে। ঠেলে দিচ্ছে পূর্ণমাত্রার দুর্ভিক্ষের দিকে। দুই মাস ধরে চলা এই অবরোধে খাদ্য, পানি ও ওষুধ প্রবেশ একপ্রকার বন্ধ। যা গাজাবাসীর জন্য অসীম কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি আরও বলেছেন, গাজার আগামী দিনগুলো অত্যন্ত সংকটজনক হতে চলেছে। গাজার মানুষ বেঁচে নেই। যারা বোমা ও গুলিতে মরছে না তারা ক্ষুধা ও অবহেলায় ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) জানিয়েছে, তাদের খাদ্য মজুত পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে এবং বর্তমানে গাজায় কোনো খাদ্য বিতরণই হচ্ছে না। অধিকাংশ মানুষ এখন অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে ভয়াবহ অপুষ্টির শিকার হচ্ছে শিশুরা। ১৬ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে অপুষ্টির ঘটনা বাড়ছে। চিকিৎসাব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। ব্যথানাশক না থাকায় শিশুদের আর্তনাদে হাসপাতাল কাঁপছে। কিন্তু ডাক্তারদের কিছুই করার নেই। মানবিক সহায়তা বন্ধ, আর এটাকেই অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।
এদিকে এ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেই গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যহত। রোববার আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজার খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একটি তাঁবুতে বোমা হামলা চালিয়েছে বর্বর সেনারা। এতে এক শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়া খান ইউনিসের জেলেদের ওপরও গুলি চালিয়েছে তারা। এতে কমপক্ষে একজন নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন। মধ্য গাজার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে বোমাবর্ষণ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। রাফাহ শহরে আরও বেশ কিছু বাড়িঘর ভেঙে ফেলছে। কিছু বাড়ি ঘিরেও রেখেছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইলি হামলায় ৫২ হাজার ২৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৩৯ জন।