ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্ব অর্থনীতির দুই প্রধান শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার শুল্কযুদ্ধ আরও তীব্র আকার নিয়েছে। এবার চীনা পণ্যের ওপর শুল্কহার বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করল ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চীনের ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ’-এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যবস্থা নিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের বক্তব্যে বলা হয়, চীন যেহেতু পাল্টা শুল্ক আরোপ করে মার্কিন পণ্যের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে, তাই তারা এখন থেকে ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্কের মুখোমুখি হবে। এর আগে চীনা পণ্যের ওপর শুল্কহার ছিল ১৪৫ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক বেশ খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। চলতি বছরের শুরুতে চীনা পণ্যের ওপর প্রথমে ২০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়। এরপর একাধিক ধাপে তা বাড়িয়ে ১০৪ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়।
এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন আরও কয়েক দফায় শুল্ক বাড়ায়। প্রথমে তা হয় ১২৫ শতাংশ, পরে গিয়ে ঠেকে ১৪৫ শতাংশে। তবে এতে থামেনি যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ। চীনের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর আরও ১০০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়ে মঙ্গলবার তা ২৪৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়।
এদিকে, বেইজিংও হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কের পাল্টা জবাবে চীন তাদের বাজারে মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়।
হোয়াইট হাউস জানায়, ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরই ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির অংশ হিসেবে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে এই কঠোর বাণিজ্য নীতি গ্রহণ করেন। এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইতোমধ্যে বিশ্বের ৭৫টির বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই এসব দেশের ওপর আরোপিত বাড়তি শুল্ক আপাতত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে চীনের ক্ষেত্রে এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, কারণ তারা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্কযুদ্ধ বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলবে এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এতে শুধু দুই দেশ নয়, প্রভাব পড়বে গোটা বৈশ্বিক বাণিজ্যে।

Discussion about this post