ডেস্ক রিপোর্ট: মার্কিনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) ও ক্রিটিক্যাল থ্রেটস প্রজেক্ট (সিটিপি) দাবি করেছে, ইরান তাদের কিছু পারমাণবিক উপকরণ গোপনে সরিয়ে ফেলেছে। এবং সেগুলো এমন স্থানে সরিয়ে নিয়েছে যেখানে তা ধ্বংস করা কঠিন।
আইএসডব্লিউ ও সিটিপি’র সর্বশেষ যৌথ মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরাইলি হামলার আশঙ্কায় গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক উপকরণ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলা হয়েছে, যাতে সেগুলো ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
এই কৌশলের উদ্দেশ্য কী— তা ব্যাখ্যা করে পর্যবেক্ষকরা বলেন, এর মাধ্যমে ইরান পশ্চিমাদের সামনে এমন একটি বার্তা দিতে চাইছে যে, ‘সব পারমাণবিক উপকরণ ধ্বংস করতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে দীর্ঘ, কঠিন এবং হয়তো ব্যর্থ এক অনুসন্ধানে নামতে হবে।’
এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলোকে আলোচনায় ফিরতে উৎসাহিত করাই ইরানের লক্ষ্য। পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো বলছে, এটি এক ধরনের কূটনৈতিক চাপ তৈরির কৌশল, যাতে করে পশ্চিমা শক্তিগুলো যুদ্ধ নয়, আলোচনার পথ বেছে নেয়।
ইরান অবশ্য বরাবরই বলে আসছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত। তবে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে।
আর এই জেরে গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে ইসরাইল ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে এবং এর জবাবে ইরানও ইসরাইলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু করে।
এদিকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসির বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মহাসচিব ও নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে ইরান। ইরানের আধা সরকারি সংবাদমাধ্যম ফার্স নিউজের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।
তেহরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কার্যক্রমের বিষয়ে রাফায়েল গ্রোসির মনোভাব নিয়ে সমালোচনা করেছেন ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির–সায়েদ ইরাভানি। সেই সঙ্গে ইসরাইলি হামলার নিন্দা না জানানোকেও ইরাভানির ব্যর্থতা বলেন তিনি।
ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামি গত বৃহস্পতিবার রাফায়েল গ্রোসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি রাফায়েল গ্রোসির বিরুদ্ধে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় ইসরাইলি হামলার সময় ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ এনেছেন।