ডেস্ক রিপোর্ট: প্রথমবারের মতো কারাবন্দীদের জন্য ‘অন্তরঙ্গ সময়’ কাটানোর সুযোগ চালু করেছে ইতালি। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দেশটির উমব্রিয়া অঞ্চলের টের্নি শহরের একটি কারাগারে বিশেষভাবে প্রস্তুত কক্ষে এক বন্দী তার নারীসঙ্গীর সঙ্গে সাক্ষাতের মাধ্যমে এ প্রকল্পের উদ্বোধন হয়।
ইতালির সাংবিধানিক আদালতের এক আদেশের ভিত্তিতে এই সুবিধা চালু করা হয়েছে। আদেশে বলা হয়, কারাবন্দীদের তাদের সঙ্গীর সঙ্গে ‘প্রাইভেট সাক্ষাতের’ অধিকার রয়েছে। এর ফলে নির্দিষ্ট কিছু বন্দী এবার থেকে কারাগারের বাইরে থেকে আসা স্বামী-স্ত্রী বা দীর্ঘমেয়াদি সঙ্গীদের সঙ্গে প্রহরীহীন একান্ত সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন।
উমব্রিয়ার কারাবন্দীদের অধিকারবিষয়ক ন্যায়পাল জিউসেপে কাফোরি সংবাদ সংস্থা এএনএসএকে জানান, ‘আমরা খুশি, কারণ সবকিছুই শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে সাক্ষাৎকারকারীদের গোপনীয়তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।’
টের্নি কারাগারে প্রথম ‘অন্তরঙ্গ সাক্ষাতের’ ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি একধরনের পরীক্ষামূলক উদ্যোগ ছিল। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আরও কিছু সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে।’
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইতালির আদালতের দেওয়া ওই আদেশে বলা হয়, প্রহরীদের নজরদারি ছাড়া কারাবন্দীদের নিজ সঙ্গীদের সঙ্গে একান্ত সময় কাটানোর অধিকার থাকা উচিত। ইউরোপের অনেক দেশ—যেমন ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনে এই ধরণের দাম্পত্য সাক্ষাৎ অনুমোদিত রয়েছে।
গত সপ্তাহে ইতালির বিচার মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশনা জারি করে জানায়, যেসব বন্দী এ সুবিধা পাবেন, তাদের বিছানা ও টয়লেটযুক্ত একটি কক্ষে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত অবস্থানের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে নির্দেশনায় বলা হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে সেই কক্ষের দরজা বন্ধ করা যাবে না, যাতে প্রয়োজনে কারারক্ষীরা হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
ইতালি ইউরোপের অন্যতম দেশ, যেখানে কারাগারগুলো ধারণক্ষমতার তুলনায় অতিরিক্ত বন্দীতে ভরপুর। দেশটির কারাগারগুলোতে বর্তমানে ৬২ হাজারের বেশি বন্দী রয়েছে, যা সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় ২১ শতাংশ বেশি। এই পরিস্থিতিতে কারাগারগুলোর মধ্যে আত্মহত্যার হারও উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।