Print Date & Time : 20 April 2025 Sunday 10:31 am

এই সময়ের ডেঙ্গু জ্বর কেন আলাদা

ডেস্ক রিপোর্ট:  আবারও বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ।
প্রতি বছর এই সময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে। এ সময়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কিছু সাধারণ পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

এবার এ সময়ের ডেঙ্গুকে একটু আলাদা বিবেচনা করে পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক আহমেদ। তার মতে, এখন ডেঙ্গু রোগীর বেশির ভাগই সেকেন্ডারি রোগী যাদের আগেও ডেঙ্গু হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আক্রান্তদের উপসর্গগুলো যেমন কিছুটা ভিন্ন, তেমনি রোগের জটিলতা ও মৃত্যুঝুঁকিও বেশি।

প্রকারভেদে এখন ডেঙ্গু জ্বর তিন ধরনের হয়ে থাকে। গ্রুপ–এ–তে কোনো জটিলতা থাকে না। গ্রুপ–বি রোগীদের ‘ওয়ার্নিং সাইন’ অর্থাৎ বিপদসংকেত থাকতে পারে অথবা এদের আগে থেকেই হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনি বা লিভারজনিত ক্রনিক রোগ ছিল বা এরা উচ্চ স্বাস্থ্য-ঝুঁকিপূর্ণ, যেমন স্থূলকায়, গর্ভবতী, শিশু বা বয়স্ক রোগী। আর গ্রুপ–সি হচ্ছে তীব্র জটিল রোগী, যেমন বুকে বা পেটে পানি, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বা রক্তচাপ কমে যাওয়া, তীব্র রক্তক্ষরণের কারণে রক্তচাপ কমে যাওয়া অথবা নির্দিষ্ট একটা অঙ্গ বিকল, যেমন লিভার ফেইলিউর, ব্রেন এনকেফালাইটিস, কিডনি ফেইলিউর নিয়ে আসতে পারে।

জটিলতা এড়াতে করণীয়
ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হলে তা নির্ণয়যোগ্য অবস্থায় আসতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগে। মোটামুটি সাত দিন। জ্বরের প্রথম তিন-পাঁচ দিনের মধ্যে সিবিসি ও এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন এবং সাত দিন পর ডেঙ্গু আইজি-এম ও আইজি-জি অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা উচিত।

রোগীর নাড়ির গতি ও অন্যান্য শারীরিক পরীক্ষা এবং রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসক আপনাকে নির্দেশনা দেবেন, আপনার চিকিৎসা বাড়িতে করা যাবে, নাকি হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। শারীরিক পরীক্ষার ভেতর ‘টরনিকুয়েট টেস্ট’ নামে এমন একটি পরীক্ষাও রয়েছে, যা ‘পজিটিভ’ হলে ডেঙ্গু জ্বর ধরে নেওয়াই যায়। এটি জ্বরের প্রথম দিকে করা। মনে রাখতে হবে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসা শুরু করা হলে তা থেকে বেরিয়ে আসাটা কঠিন হয়ে পড়ে।

প্রত্যেক রোগীকেই একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। নির্দেশনামাফিক রক্তচাপ মাপাতে হবে, নির্দিষ্ট সময় পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে। তাহলে জটিলতার দিকে যেতে থাকামাত্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে। এ ছাড়া জ্বরের সাধারণ চিকিৎসা তো চলবেই। অল্প গরম পানিতে শরীর মুছিয়ে দেওয়া বা গোসল করা যেতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরের রোগীকে অবশ্যই প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে পুষ্টি ও লবণসমৃদ্ধ তরল, যেমন খাওয়ার স্যালাইন, ডাব, ফলের রস, শরবত, ভাতের মাড় ইত্যাদি। প্যারাসিটামল সেবন করা যেতে পারে। কিন্তু অ্যাসপিরিন বা ব্যথানাশক সেবন করা যাবে না।