ডেস্ক রিপোর্ট: ইসরাইল অধিকৃত ভূখণ্ডে ইয়েমেন থেকে আবারও একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। তবে সেটি প্রতিহত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরাইলি বাহিনী।
রোববার ইসরাইলি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে লেবাননের সংবাদমাধ্যম আল-মায়াদিন এ তথ্য দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষেপণাস্ত্রটি তেলআবিবের গুরুত্বপূর্ণ বেনগুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বা এর আশপাশের এলাকাকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়েছিল। এ হামলার পরপরই বেন-গুরিয়নের সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে বলে জানায় টাইমস অব ইসরাইল।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, হুথি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের সামরিক বাহিনী রোববার ইসরাইলে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। তবে ইসরাইলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা সেটি সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে।
সম্প্রতি ইয়েমেনের এ ধরনের হামলা প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে টাইমস অব ইসরাইল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জেরুজালেম এলাকা, দক্ষিণ পশ্চিম তীরের জনবসতি এবং ডেড সি-এর কাছাকাছি ইহুদি বসতিগুলোতে সাইরেন বেজে ওঠে। সাইরেন বাজানোর প্রায় পাঁচ মিনিট আগে বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে একটি প্রাথমিক সতর্কতা জারি করা হয়। ব্যক্তিগত ফোনে একটি পুশ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে বেসামরিক নাগরিকদের সতর্ক করা হয়।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষেপণাস্ত্রের একটি অংশ পশ্চিম তীরের দক্ষিণ হেব্রনের পাহাড়ি এলাকায় পড়ে থাকার খবর পাওয়া যায়।
পশ্চিম তীরের দক্ষিণ হেব্রনের পাহাড়ি এলাকায় পড়ে থাকা বস্তুটি ইয়েমেনিক্ষেপণাস্ত্রের একটি অংশ, দাবি ইসরাইলের
গত চার দিনের মধ্যে এটি তৃতীয় এবং গত রোববারের পর এটি পঞ্চম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বলেও জানিয়েছে ইসরাইল।
চলতি মাসের শুরুতে ইয়েমেনের একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরের মাঠে আঘাত হানে। যার ফলে সেখানে প্রায় ৩০ ফুটের মতো গর্ত সৃষ্টি হয় এবং ৬ জন আহত হয়।
এদিকে আল-মায়াদিন ও মেহের নিউজ জানিয়েছে, রোববারের এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে এখনো পর্যন্ত ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত সেনাবাহিনী বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
গত কয়েক সপ্তাহে হুথি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী ইসরাইলের গাজা আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে একের পর এক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে।
ইসরাইলি বাহিনী বেশিরভাগ হামলা প্রতিহত করার দাবি করলেও হামলাগুলো দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর চাপ তৈরি করছে।
এ ধরনের নিয়মিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ইসরাইলি বিমানবন্দরের ফ্লাইট স্থগিত হওয়ার ঘটনা ইঙ্গিত করে যে, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত এখন আর শুধু গাজায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং তা এক ভয়ানক আঞ্চলিক রূপ নিচ্ছে। ইয়েমেন, ইরান, লেবানন ও ইসরাইল—সবগুলো পক্ষের পদক্ষেপ এখন খুবই স্পর্শকাতর। পরিস্থিতি যেকোনো সময় আরও বিস্ফোরক হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।