ডেস্ক রিপোর্ট: জার্মানির ক্ষমতাসীন দলের অন্যতম শরিক, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসপিডি)-এর কয়েকজন সংসদ সদস্য ইসরাইলের কাছে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের দাবি তুলেছেন। তারা বলেছেন, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সহিংস সামরিক অভিযানের কারণে মানবিক বিপর্যয় ঘটছে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হচ্ছে। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
এসপিডি-র সংসদীয় দলের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক মুখপাত্র আদিস আহমেতোভিচ জার্মান ম্যাগাজিন স্টার্নকে বলেন, জার্মান অস্ত্র দিয়ে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি বা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করা যাবে না। আমরা নেতানিয়াহুর সরকারকে আহ্বান জানাই যেন তারা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় এবং আলোচনার টেবিলে ফিরে আসে।
তার এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন এসপিডি-র আরেক প্রভাবশালী নেতা রালফ স্টেগনার। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান মানবিক বিপর্যয় এবং ইসরাইলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বন্ধ হওয়া জরুরি। জার্মান অস্ত্র দিয়ে এ সহিংসতা আরও দীর্ঘায়িত করা উচিত নয়।
স্টেগনার আরও বলেন, জার্মান সরকার অতীতে একটি ব্যতিক্রম হিসেবে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় অস্ত্র না পাঠানোর নিয়ম ভেঙে ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল, কারণ তা ইসরাইলের নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যবহৃত হতো। কিন্তু এখন গাজা ও পশ্চিম তীরে সেই যৌক্তিকতা আর নেই।
এসপিডি-র আরেক এমপি ইসাবেল কাদেমার্তোরি সতর্ক করে বলেন, ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে জার্মানি যুদ্ধাপরাধে জড়িত হতে পারে। এমনকি আন্তর্জাতিক আদালতে জার্মানির বিরুদ্ধে মামলাও হতে পারে।
তিনি বলেন, ট্যাংকের গোলাবারুদ ও যন্ত্রাংশ সরবরাহসহ সব ধরনের অস্ত্র রপ্তানি সীমিত করা উচিত।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে জার্মান সরকার মোট ১.১৮ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে ইসরাইলের জন্য অনুমোদিত রপ্তানি মূল্য ২৮ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৩১.৯ মিলিয়ন ডলার)। অস্ত্র রপ্তানির দিক থেকে ইসরাইল বর্তমানে জার্মানির ১০ম স্থানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইসরাইলের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব জার্মানির উপর রয়েছে বলে বহুবার উল্লেখ করেছেন দেশটির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎস।
তবে অনেক সমালোচক মনে করেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি জার্মানির অন্ধ সমর্থন আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে এবং জার্মানিকে বিশ্বে আরও একঘরে করে দিচ্ছে।
এদিকে, গাজায় ইসরাইলের অভিযান নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলায় লড়ছে তেলআবিব। সেখানে লাখো ফিলিস্তিনি গৃহহীন, খাদ্য ও ওষুধ সংকটে চরম দুর্দশায় রয়েছে। তবুও আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরাইল সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।