ডেস্ক রিপোর্ট: রাশিয়া ও ইউক্রেন ‘অবিলম্বে’ যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দুই ঘণ্টার ফোনালাপের পর তিনি এই ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ট্রাম্প বলেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনা ‘খুব ভালো’ হয়েছে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার শর্তগুলো দুই দেশের মধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য শান্তি সমঝোতা নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একে ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়’ বলে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রকে আলোচনায় সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইতোমধ্যে জেলেনস্কিকেও এই আলোচনা শুরু হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। দ্বিতীয় ফোনালাপে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনসহ ফ্রান্স, জার্মানি, ফিনল্যান্ড এবং ইতালির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ করার জন্য আলোচনার শর্তগুলো ঠিক করবে দুই পক্ষ। কারণ, কেবল তারাই জানে আলোচনার প্রকৃত বিবরণ। ‘
অন্যদিকে জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেন, এই আলোচনা যেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় প্রতিনিধি নিয়েই হয়। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজেকে সরিয়ে নেয়, তবে একমাত্র লাভবান হবেন পুতিন।’
পুতিন বলেছেন, তারা একটি শান্তি-সমঝোতার খসড়া প্রস্তুত করতে রাজি, যাতে ‘মীমাংসার নীতিমালা ও একটি সময়সীমা’ নির্ধারণ থাকবে। এতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের যুদ্ধবিরতির কথাও উল্লেখ থাকবে, যদি দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছায়।
পুতিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট যুদ্ধবিরতির সময়সীমা এখনো ঠিক হয়নি। তবে ট্রাম্প দ্রুত কোনো চুক্তি চাচ্ছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপের পর জেলেনস্কি আবারও বলেন, তারা ‘পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি’ চান। আর রাশিয়া যদি রাজি না হয়, তাহলে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে যেন কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়।
তার ভাষায়, ‘এটা আমাদের নীতিগত বিষয়।’ তিনি বলেন, পুতিনের প্রস্তাবিত ‘মেমোরেন্ডাম’ সম্পর্কে ইউক্রেন এখনো বিস্তারিত কিছু জানে না। আমরা কোনো কাগজপত্র হাতে পেলে, তখন নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করব।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়া প্রস্তাব দিয়েছিল যাতে ন্যাটো, ওএসসিই ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন একটি চুক্তি হয়—যেখানে স্পষ্টভাবে বলা থাকবে, ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু পশ্চিমা শক্তিগুলো এমন কোনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।